Subscribe:

বন্ধন

অ্যালার্ম ঘড়িটা এক মাস যাবত নষ্ট।পৌনে আটটায় এসে থেমে আছে।একদিক থেকে অবশ্য এটার কিছু সুবিধাজনক ব্যাপার আছে।ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে না হলে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়া যায়-মাত্র তো পৌনে আটটা বাজে!বেকার যুবকদের জন্য সকাল এগারোটা পর্যন্ত ঘুমানো বাধ্যতামূলক।সেখানে পৌনে আটটা মানে সকাল এখনও শুরুই হয়নি।


                   কিন্তু আজকে নিয়াজের সান্ত্বনামূলক ঘুমের প্রতি চরম বিদ্রোহ দেখিয়ে মিলি তারস্বরে চেঁচিয়ে যাচ্ছে।মিলি নিয়াজের ভাবি।তার চেঁচামেচির কারণ- কাজের বুয়া মতির মা একগাদা তেল দিয়ে ভাজি চড়িয়েছে।নিয়াজ হাই তুলতে তুলতে বাথরুমের দিকে আগাল।

এই বাসার বাথরুমের বিশেষত্ব হল এখানে প্রায় হাফ ডজন মাকড়সা বিভিন্ন কোনায় ঘাপটি মেরে থাকে।
এদের মধ্যে একজনের সাথে নিয়াজের বিশেষ খাতির।নিয়াজ বাথরুমে ঢোকা মাত্র সে কিলবিল করে বীভৎস ভঙ্গিতে এগিয়ে আসে।কোনোমতে দাঁত ব্রাশ করে নিয়াজ খাবার টেবিলের দিকে আগাল।এই বাসার সব চেয়ারের পায়া ভাঙ্গা।যে কোন মুহূর্তে উল্টে পড়ে যাওয়ার বিকট সম্ভাবনা আছে।চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মাথা ঝিমঝিম করছে নিয়াজের।নিয়াজ বলল,"মতির মা,আমি চায়ে দুই চামচ চিনি খাই।তুমি পুরো চিনির বয়াম ঢেলে দিয়েছ কেন?"
মতির মা উদাস গলায় বলল,"বেহিসাবি কামে মতির মা নাই।সিরাজগঞ্জের মানুষ আমি,আমার সব কিছু হিসাবের মইদ্ধে ভাইজান।"
                         নিয়াজ কিছু না বলে ড্রইংরুমের দিকে আগাল।তার ভাইয়ের ছেলে আদা গভীর মনোযোগে ডরেমন নামক এক হিন্দি কার্টুন দেখছে।তার আসল নাম আদ্রিয়ানো।কোন এক খেলোয়াড়ের নামে নাম।আজকাল বাচ্চাদের কঠিন কঠিন নাম রাখার ফ্যাশন চলছে।যে নাম উচ্চারণে বেশি সংখ্যক দাঁত ভাঙবে,সেই নাম তত সুন্দর বলে বিবেচিত হবে।নিয়াজকে দেখামাত্র আদা গলায় মাইক ফিট করে চেঁচিয়ে বলল,"তুমকো বান্দার জায়সা লাগতা হ্যায়।"

ডরেমন কার্টুন দেখে আদা আজকাল সারাক্ষণ হিন্দি বলে।নিয়াজের ইচ্ছা করছে ঠাশ করে এই বদমাশটার গালে গুনে গুনে তিন চারটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে।কিন্তু সেটা না করে সে গলায় মধু ভাব এনে বলল,"স্কুলে যাবেনা সোনা?"
চোখ মুখ লাল করে আদা বলল,"মুঝে স্কুল আচ্ছা নেহি লাগতা।"
নিয়াজ গলার মধু ভাব আরও প্রবল করে বলল,"কেন বাবু?"

                   চাচাতো ভাইয়ের সংসারে পরগাছা হয়ে থাকার প্রধান শর্ত হল একটু পরপর গলায় মধুভাব এনে ফেলা।আরেকবার মধু ঢালার আগেই মিলি বাজারের ব্যাগ নিয়ে এসে দাঁড়ালো।হাতে টাকা দিয়ে বলল,"দেখে শুনে কিনবে নিয়াজ।গতবার পচা মাছ এনেছিলে।দরদামটাও একটু করা শেখো।টাকা তো আর শিলাবৃষ্টির মত আকাশ থেকে পড়েনা।"
নিয়াজ মনে মনে বলল,"চুপ থাক শকুনি।মুখ দিয়ে আর কোন শব্দ করবি তো নগদে লাথি খাবি।"
"আর আমার উপটানটা দেখেশুনে কিনবে।আলমাস থেকে।"
নিয়াজ এবার মনে মনে বলল,"যে চেহারা তাতে উপটান মুখে মাখা তো দূরে থাক,গুলে খেয়ে ফেললেও উন্নতি হবেনা।"
                বিরস মুখে বাসা থেকে বের হল সে।কাল রাতে মাকে নিয়ে খুব খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছে।ছোট বেলায় দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেলে মায়ের কাছে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকতো।আজ মাকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখে কার কাছে গিয়ে বসে থাকবে?
মার্চ মাসের রোদ গায়ে লাগা মাত্র মনে উদাস ভাব চলে আসে......নিয়াজের তার বদলে কেমন যেন অস্থির লাগছে......

 ******       ********         ******

                  মহারাজ অনেক সময় নিয়ে চুল আঁচড়াল।সানগ্লাসটা চোখে দিয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে সে।নীলক্ষেত থেকে কিনেছে গত পরশু দিন ।পকেট থেকে পুরো একশো চল্লিশ টাকা বেরিয়ে গেছে।
তাড়াহুড়া না থাকলে আরও কমে কিনতে পারত।নতুন জুতাটাও পড়ল।এটাও পরশু কেনা।এক সাথে অনেকগুলো টাকা বেরিয়ে গেছে......কিন্তু তাতে কি?এই এক আধটা শখ ছাড়া জীবনে আর আছে কি?গত মাসে মহারাজের দীর্ঘদিনের প্রেমিকা রানুর বিয়ে হয়ে গেছে।রানুর বাপের মহারাজকে পছন্দ না।কারণ মহারাজ একজন পকেটমার।সে নিজ পছন্দে কোন এক বাস ড্রাইভারের সাথে রানুর বিয়ে দিয়েছে।রানু কিছুদিন কান্নাকাটি করল,"আমারে ভুইলা যাও......পরির লাহান একটা মাইয়ার লগে
বিয়া হইব তোমার।"-এই জাতীয় বাংলা সিনেমার ডায়লগ ছাড়ল,তারপর হাসিমুখে শ্বশুরবাড়ি চলে গেল।
                   মহারাজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।শালা তার কপালটাই খারাপ।জন্ম থেকেই সবাই
তাকে ফেলে চলে যায়।জন্মের দুই দিনের মাথায় মা চলে গেল।না না,আবেগি হওয়ার কিছু নাই।তার মা তাকে জন্ম দিয়ে মরে যায়নি।বরং ওকেই মেরে ফেলতে চেয়েছিল।একটা কাঁথায় মুড়ে ডাস্টবিনের মধ্যে ফেলে দিয়ে দ্রুত পায়ে চলে গিয়েছিল।এই কাহিনী মহারাজ শুনেছে রমজান চাচার কাছে।সে-ই ওকে কুড়িয়ে নিয়ে এসেছিল।তারপর নিজের ছেলের মত মানুষ করেছে।একটা গালভরা নামও দিয়েছে-মহারাজ...সেই বুড়ো হাবড়াটাও কিনা কলেরা হয়ে মরে গেল।কারোর চলে যাওয়াই এখন আর কষ্ট দেয়না মহারাজকে।শুধু মাঝে মাঝে রাস্তায় যখন দেখে স্কুলের পোলাপানগুলোর সাথে মা নামের কেউ একজন খুব আদিখ্যেতা করছে,পানির বোতলটা এগিয়ে দিচ্ছে,ওর কেমন যেন অবাক লাগে।                    খুব ইচ্ছে করে জানতে,তার মা মুখপুরিটাও কি তার অন্য বাচ্চা গুলোর সাথে এমন আদিখ্যেতা করে?তবে ওর দোষ কি ছিল?ও কি অবৈধ বাচ্চা ছিল?পৃথিবীতে আনার দরকার কি ছিল তাহলে?ভাবতে ভাবতে কেমন জানি ক্লান্ত লাগে......
     ******        ******        ******
                     ঢাকা শহরের বাসগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য-তাতে কখনই সিট ফাঁকা থাকবে না।যত মানুষ বসে থাকবে,তার দিগুণ মানুষ বাসের রড ধরে ঝুলে থাকবে,এবং আরও তিনগুণ মানুষ বাসের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়তে চেষ্টা করবে।নিয়াজ এখন বহুকষ্টে একটা বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে আরেক হাতে রড ধরে ঝুলে আছে।তার পাশে জলহস্তীসম একজন মহিলা হাইহিল পড়ে দাঁড়িয়ে আছেন।তার বয়স আন্দাজ করা যাচ্ছে না।ঢাকা শহরের সব মহিলাদের আজকাল সমবয়সী মনে হয়।ধানমণ্ডির কোন স্কুলে বাচ্চা নিয়ে আসা মহিলার চেহারাও যেমন,প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়া তরুণীর চেহারাও তেমন।সবার চেহারাই নতুন কেনা গাড়ির মত ঝাঁ চকচকে।সবার চুল কোন বিশেষ কায়দায় পার্লার থেকে ঝাড়ুর মত সোজা করা,ফেসিয়াল করা মুখে দুই ইঞ্চি মেকাপ।চোখে রঙ বেরঙের লেন্স।পরনে বেশির ভাগ সময় জিন্স ফতুয়া।                    নিয়াজের চট করে তার মায়ের চেহারাটা মনে পড়ে গেল।জন্ম থেকে আজ অব্দি মাকে
কখনও সুতির শাড়ী ছাড়া আর কিছু পড়তে দেখেনি সে।ফেসিয়াল করে মলিন মুখটাকে উজ্জ্বল দেখানোর চেষ্টাও করেননি কখনও।চশমার ডাঁট ভেঙে গেছে কবেই...কিন্তু সেই ভাঙা চশমা চোখে লাগিয়েই প্রতিদিন সকালে কোরআন শরীফ পরেন।ঈদে কখনও নতুন কাপড় নেন না।নিয়াজের বাবা মারা যাওয়ার পর
কি অসাধ্য উপায়ে এই মহিলা সংসার চালিয়ে নিয়াজকে মানুষ করেছেন তা একমাত্র তিনিই জানেন।ফ্যান কেনার সামর্থ্য ছিল না,গরমের রাতে নিজে না ঘুমিয়ে পুরোটা রাত পাখা দিয়ে বাতাস করতেন নিয়াজকে।নিয়াজ যখন সারারাত জেগে পড়ত,তিনিও ওর পাশে বসে থাকতেন সারারাত।।
                    ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর টিউশনি করে নিজেই নিজের খরচ চালাত নিয়াজ।
প্রতি মাসে পাঁচশো টাকা পাঠাতো মাকে।এই সামান্য টাকা পাঠাতে লজ্জা হত খুব।ভাবত পাস করে বেরিয়ে প্রথম চাকরির পুরো টাকাটা মায়ের হাতে তুলে দেবে......মায়ের জন্য একটা নতুন শাড়ি কিনবে,আর একটা নতুন চশমা।কিন্তু সেই শুভলগ্ন আর আসে না।
                     মামা চাচার জোর ছাড়া যে চাকরি হয়না এটা এতদিনে নিয়াজ বুঝে গেছে।দু বছর ধরে বেকার পড়ে আছে।এক সময় ভেবেছিল সব ছেড়েছুড়ে হিমুর মত হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে রাস্তায় রাস্তায় হাঁটবে।কিন্তু হিমুর কোন পিছুটান নেই।তার আছে.....অনেক বড় পিছুটান......মা......
                    নিয়াজের পকেটে একটা চিঠি।কাল রাতে মাকে লিখেছে।চিঠির মধ্যে দুইশ টাকা।নিয়াজের টিউশনিটা চলে গেছে কিছুদিন আগে।তার ক্লাস টেনে পড়ুয়া ছাত্রী একদিন বলে,"স্যার,আমি না একটা গল্প লিখেছি।আপনি কি একটু  পড়ে দেখবেন?"
নিয়াজ গম্ভীর মুখে বলল,"গল্পের কাহিনী কি?"
"গল্পের কাহিনী হল এক মেয়ে তার প্রাইভেট টিউটরের প্রেমে পড়ে যায়।তার ধারনা তার স্যারেরও তাকে বিশেষ পছন্দ।"
নিয়াজ শান্ত মুখে গল্প পড়লো।তারপর বলল,"তোমার লেখার স্টাইল অতি নিম্নমানের।আর যে কাহিনী লিখেছ তা আরও নিম্নমানের।"
"স্যার,আমি আমার লেখা সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানতে চাইনি।"
নিয়াজ হাই তুলতে তুলতে সরল মুখে অতি জটিল এক মিথ্যা বলে ফেলল,"যে সম্পর্কে জানতে চেয়েছ সে সম্পর্কে বলি তাহলে?আমার এক ক্লাসমেটকে কিছুদিন আগে আমি গোপনে বিয়ে করেছি।চাকরি বাকরি পাইনি বলে কাউকে জানাতে পারছি না।বুঝতে পেরেছ?"
                   ছাত্রী কিছুক্ষণ গোলগোল চোখে তাকিয়ে রইল এবং তার এক সপ্তাহ পর নিয়াজের টিউশনি চলে গেল।            বাস থেকে নেমে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইল নিয়াজ।পকেটে মানিব্যাগ নেই।হঠাৎ কেমন জানি দিশেহারা লাগছে ওর।

***** ****** ******

              মহারাজ বাস থেকে নেমে তৃপ্তির একটা হাসি দিল।পকেটমারিতে বিরাট একটা দান মেরেছে।তাড়াহুড়া করতে গিয়ে মানিব্যাগের সাথে কিছু কাগজপত্রও চলে এসেছে......একটা চিঠিও আছে তার মধ্যে।নিশ্চয়ই প্রেমপত্র!!নিজের প্রেমপত্র পড়তে যত মজা,অন্য কারোটা পড়তে আরও বেশি মজা।মহারাজ চাপা উত্তেজনা নিয়ে চিঠি খুলল......

             "মা,
কেমন আছো তুমি?বুকের ব্যাথাটা কি একটু কমেছে?অনেকদিন চিঠি লেখার সময় পাইনি।তাই বলে ভেবনা তোমাকে ভুলে গেছি।চাকরির খোঁজে সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে কখনও খালি পায়ে,কখনও বাসে ঝুলে রোদের মধ্যে ঘুরে বেড়াই...তখন বারবার শুধু মনে হয় এক ছুটে তোমার কাছে চলে আসি।তারপর তোমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকব আর তুমি চুলে বিলি কেটে দেবে.....এই দ্যাখো,কেমন পানি চলে আসছে চোখে!আমার  টিউশনিটা চলে গেছে মা...এই মাসে মাত্র দুইশ টাকা পাঠালাম।এই অপদার্থ ছেলেকে ক্ষমা করে দিও মা।তোমার কোন কষ্টই সে দূর করতে পারেনি আজ পর্যন্ত।আমি মাঝে মাঝে ভেবে অবাক হই,কোন পুণ্য কর্মের জোরে আমার মত অধমকে তোমার মত একজন অসাধারণ মা দেয়া হয়েছে?"


চিঠি পড়ে মহারাজের চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে।ডাক ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।জীবনে এই প্রথমবার তার খুব ইচ্ছে হচ্ছে কাউকে মা বলে ডাকতে......খুব ইচ্ছে হচ্ছে...


                   ৭ দিন পর নিয়াজের ঠিকানায় ২টা চিঠি এল।প্রথমটা লিখেছেন মা।চিঠি পড়ে নিয়াজ যারপরনাই বিস্মিত হল।এই মাসে সে টাকাই পাঠাতে পারেনি পকেটমারির জন্য।আর মা কিনা লিখেছেন তিনি পনেরশ টাকা পেয়েছেন!পরের চিঠিতে তার জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছিল।সেখানে লেখা-

                                    "আমার চিঠি পেয়ে আপনি খুব অবাক হচ্ছেন জানি।আপনার মাকে পাঠানো চিঠিতে প্রেরকের জায়গায় আপনার ঠিকানা লেখা ছিল।সেখান থেকেই আপনার ঠিকানা পেয়েছি।এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে আপনার মানিব্যাগ আমিই পকেটমারি                  করেছিলাম।আমি জন্ম থেকে কখনও মা নামের কাউকে পাইনি।মায়ের প্রতি মমতাটা ঠিক কেমন হয় তাও জানিনা।কিন্তু আপনার চিঠি পড়ে আমার মনে হয়েছে দূরগ্রামের আপনার দুঃখিনী মায়ের জন্য আপনার যতখানি আকুলতা,অস্থিরতা ...  তার কিছুটা অংশ হলেও আমার মধ্যে ছড়িয়ে গেছে।দুইদিন রাতে ঘুমাতে পারিনি রে ভাই।আপনার টাকার সাথে মিলিয়ে আমার সব জমানো টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছি।মা তো মা-ই তাইনা?ভাল থাকবেন ভাই।মায়ের দিকে খেয়াল রাখবেন।"


                 (বেশ কিছুদিন আগে ফেসবুকের কোন একটা পেজে একটা ছোট্ট স্ট্যাটাস দেখেছিলাম।তাতে একজন তার মাকে চিঠি লিখেছিল।কোন পকেটমারের হাতে সেটা পড়লে সে ওই ছেলেটির মাকে নিজে থেকে টাকা পাঠিয়ে দেয়।তখনই এই গল্পটা লেখার কথা মাথায় আসে।পৃথিবীর বিশুদ্ধতম অনুভূতি হল মা আর সন্তানের ভালবাসা।মায়ের প্রতি এই অনুভূতিটা একেবারে সার্বজনীন।একজন বেকার যুবক
অথবা একজন পকেটমার......দুজনের সব কিছু হয়ত ভিন্ন,কষ্টের প্রকৃতি ভিন্ন,সুখের অনুভূতিও ভিন্ন।কিন্তু একটা জায়গায় দুজনের অনুভূতিই এক।আর তা হল মায়ের প্রতি ভালবাসা।একজন তার নিজের মাকে কখনও দেখেইনি।জানেই না মায়ের জন্য ভালবাসা কেমন হয়।কিন্তু বিধাতা সব মায়েদের মধ্যেই কোন
এক জাদুকরী ক্ষমতা দিয়েছেন।তারা কিভাবে যেন সবাইকেই তাদের মমতার বাঁধনে বেঁধে ফেলেন... এই বাঁধন খুব শক্ত,চাইলেও ছেঁড়া যায়না।                  আমি নিজে কন্যা হিসেবে নিম্নশ্রেণীর।কখনই এমন কিছু করতে পারিনি যাতে আমার মা গর্বিত হন।বরং এমন কাজ করেছি যাতে বারবার তিনি কষ্ট পেয়েছেন।এই লেখাটা আমার মা এবং
আমার মত সব অযোগ্য সন্তানদের মায়েদের জন্য।যারা খুব বলতে চায়,কিন্তু কখনও মুখ ফুটে বলতে পারেনা- "তোমাকে অনেক ভালবাসি মা।অনেক বেশি......"


-আয়শা কাশফী

No comments:

Post a Comment