আমার ছোট দুই ভাই পশু-পাখি পালতে খুব পছন্দ করে । কিন্তু আমার কেন যেন ভালই লাগে না এসব। প্রথম কথা, এরা ঘর বাড়ি নোংরা করে... দ্বিতীয় কথা, এদের আমার ভয় লাগে। কখন আমাকে কামড়ে-টামড়ে দেয়...! একেবারে কিন্তু অমূলক ভয় না ।
যা হোক, গত শীতের এক রাতে দেখি ছোটভাই অংকন কোত্থেকে একটা বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এল। বাচ্চাটা নাকি আমাদের বাসার বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁপছিল। রাগে আমার পিত্তি জ্বলে গেল। আর বিড়াল কি রাস্তায় দাঁড়িয়ে শীতে কাঁপছে না?? তাই বলে আদর করে বাসায় নিয়ে আসতে হবে? এখন যদি বাচ্চাটা বাথরুম করে দেয়, কে পরিষ্কার করবে?
আমার আর মায়ের বিস্তর রাগারাগির পরেও বাবা আর দুই ভাইয়ের ভোটের কারণে বিড়ালটা থেকে গেল। ভোটে হেরে যাওয়ার সাথে সাথে আমার মাথায় বাচ্চাটার জন্য একটা নাম এল। গ্রু। কিছুটা অদ্ভুত শোনালেও যারা “ডেস্পিকেবল মি” মুভিটা দেখেছেন, তারা বুঝতে পারছেন যে, গ্রু হল এই সিনেমার নায়ক যে প্রথমে শয়তান থাকে এবং পরে ভাল হয়ে যায়।
এত “কঠিন” নাম আমার আর ভাই দুইটার (অঝর, অংকন) জন্য অসুবিধার না হলেও বাবা আর মার জন্য ব্যাপক বিরক্তির উদ্রেক করল। উনারা বাচ্চাটাকে চিরাচরিত “মিনি” নামেই ডাকতে লাগলেন। আমাদের গ্রু আর বাবা-মায়ের মিনি ডাকাতে কাহিনী হল দুই রকম – বিড়ালটা নিজের নাম বুঝে উঠতে পারল না এবং কারো ডাকাডাকিতেই কোন সাড়া দিল না । শেষমেশ সবাই গ্রু নামটাই মেনে নিল।
প্রথমে আমি রাগ করলেও পরে দেখলাম, গ্রুর প্রতি আমার একটা ভাল লাগা তৈরি হল । রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ওকেও মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে ঘুমাতে যেতাম যেন শীত না লাগে। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পরেই ও গা ঝাড়া দিয়ে কাপড়টা ফেলে দিত। আমি বিছানায় উঠে যেতাম। আমার যা করার আমি করেছি। এখন শীতে মরলে ওই-ই বুঝবে।
এইভাবে দিনকে দিন গ্রু আমাদের বাসার একটা অংশ হয়ে গেল। একদিন দেখলাম, আমাদের বাসায় ওর আসার এক বছর পার হয়েছে। বেশ নাদুস নুদুস আর বড় হয়ে গেছে সেই চিকনা পটাশ গ্রু। খুব আদুরে হয়েছে। সারাক্ষণ সোফায় শুয়ে থাকবে...আর পায়ে পায়ে ঘুরবে।
একদিন সন্ধ্যায় বাসায় যেতেই অংকন উত্তেজিতভাবে বলল, “দিদি, গ্রুর বাচ্চা হবে!”
“কি!” আমিও চেঁচিয়ে উঠলাম।
চেঁচানোর কারণ আছে বইকি। আমরা কেউ বুঝি নি, গ্রু ছেলে না মেয়ে। কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমরা ধরে নিয়েছিলাম গ্রু ছেলে। হয়ত বাচ্চা কাচ্চা হলে বাড়তি ঝামেলা হবে বলে আমরা সবাই আশা করছিলাম যেন গ্রু ছেলেই হয়। কিন্তু আমাদের এক বছরের আশায় পানি ঢেলে গ্রু দিব্বি ঘুমাতে লাগল সোফায়। মা তখনি ঘোষণা দিলেন গ্রুকে দূরে কোথাও ছেড়ে আসার। আমিও মত দিলাম। কিন্তু কেউ কোন স্টেপ নিল না। সবাই মিলে চিন্তা করলাম, এই অবস্থায় ওকে ফেলে দিয়ে আসলে ব্যাপারটা অত্যন্ত অমানবিক হবে। বরং বাচ্চা হওয়ার পর কোথাও দিয়ে আসা যাবে।
এইভাবে সবাই অপেক্ষা করতে লাগলাম গ্রুর বাচ্চা দেখার জন্য। গ্রুকে সারাদিন খাওয়াতাম যেন বাচ্চার অপুষ্টি না হয়। কিন্তু গ্রুর বাচ্চা আর হয় না। এর মধ্যে একদিন দেখলাম গ্রুর বয়ফ্রেন্ডকে। গ্রু যেমন সাদা-বাদামি মেশান, ছেলে বিড়ালটা সাদাকালো মেশান। এই কম্বিনেশন দেখে আমরা আরও আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলাম বাচ্চাগুলো কি রঙের হয় দেখার জন্য। আমি বললাম তিনটা হবে...অঝর বলল, দুইটা...।
অবশেষে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মার মুখ থেকে সেই কাঙ্ক্ষিত কথাটা শুনলাম। গ্রুর বাচ্চা হয়েছে। দুইটা। একটা সাদা-বাদামি, একটা সাদাকালো। কি যে সুন্দর আর কি যে ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা! এর আগে কখনো সদ্যজাত বিড়ালের বাচ্চা দেখি নি। তাই বাচ্চা দুটো আমাদের জন্য হয়ে এল অপার বিস্ময়! একটু পর পর ছুটে যাই ওদের কাছে। ওদের কুই কুই আওয়াজ আর অদ্ভুত নড়াচড়া দেখে খুব বিনোদিত হই। মোট কথা, জীবন্ত দুইটা পুতুল পেয়ে আমরা মহা খুশি।
কিন্তু গ্রুর আচরণ আমাদের যারপরনাই অবাক আর ব্যাথিত করল। ও কেন যেন বাচ্চাদের কাছে থাকতে চায় না। খালি সোফায় শুয়ে থাকে বা বাইরে চলে যায়। অংকন বারবার ওকে বাচ্চাদের কাছে দিয়ে আসে। কিন্তু ও বারবার চলে যায়। গ্রু যেন ঠিকমত দুধ খাওয়াতে পারে, এইজন্য আমরা ওকে ভাল মন্দ অনেক কিছু খেতে দেই। গাধাটা খায় ঠিকই কিন্তু বাচ্চাদের খাওয়ায় না। খুব অদ্ভুত! এইভাবে চললে তো বাচ্চাগুলো মরেই যাবে! আর বাচ্চাগুলো মরে গেলে...... “আমি গ্রুকে মেরে ফেলব!” রাগের চোটে কথাগুলো বেরিয়ে এল মুখ থেকে।
ওমাঃ ঠিক তিন দিনের মাথায় সাদাকালো বাচ্চাটা মরে গেল। না খেতে পেয়ে। অন্তত আমাদের তাই ধারণা। আমার চোখ ফেটে কান্না বেরিয়ে এল। এত বড় মেয়ের এইভাবে কাঁদতে নেই...তাও আবার একটা বিড়ালের জন্য। কিন্তু গোল্লায় যাক লজ্জা। আমার বাচ্চাটা যে মরে গেল? গ্রু দিব্বি ঘুরে বেড়াতে লাগল। বাচ্চা যে মরে গেছে, কোন বিকারই নেই। বুঝা যাচ্ছে, সাদা বাদামিটাও মরবে।
কিন্তু কোন উপায়েই গ্রুকে দিয়ে ওর বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে পারছি না। তাই আমরা নিজেরাই চেষ্টা করতে লাগলাম বাচ্চাটাকে খাওয়ানোর জন্য। রংতুলি দিয়ে অল্প অল্প করে গরুর দুধ খাওয়াতে লাগলাম। কিন্তু এত দুর্বল বাচ্চাটা খাওয়া হজম করতে পারল না... বার কয়েক চুক চুক করে খেয়েই নেতিয়ে পরল। আর কোন কুই কুই নেই... নড়াচড়াও নেই। বিশ্বাস করতে কষ্ট হল যে, খেতে খেতেই বাচ্চাটা মরে গেছে।
কি যে কষ্ট লাগল, বলার মত না। আমার সব রাগ গিয়ে পরল গ্রুর উপর। ওকে মেরে ঘর থেকে বের করে দিতে গেলাম। মা আটকালেন। বললেন, “দেখ, গ্রুর মনটাও খারাপ। ওকে শুধু শুধু মের না।“ দেখলাম, ঠিকই। গ্রু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার রুদ্রমূর্তির দিকে। ওর চোখের যে চাহনি, তাতে যেন স্পষ্ট লেখা, “আমার বাচ্চাগুলো তো আমাকে ছেড়ে চলেই গেল। এখন তোমরাও আমাকে একা ছেড়ে দিবে?”
এখন আমরা আবারো অপেক্ষায় আছি, কবে গ্রু আবার বাচ্চা দিবে। আশা করি, দ্বিতীয়বার মা হলে বেচারী বাচ্চা কাচ্চার প্রতি আরও দায়িত্বশীল হবে। কোন বাচ্চাকে আর না খেয়ে মারা যেতে হবে না!
( আমার পোষা বিড়ালকে "গ্রু" কে নিয়ে লেখা )
--নির্ঝর রুথ ঘোষ
আসুন জেনে নিই সহবাসের সময় ছেলেদের কি কি সমস্যা হয় ও তার সমাধান
ReplyDeleteসহবাস সমস্যা
পুরুষের সকল স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
পুরুষের স্বাস্থ্য
পুরুষের সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
পুরুষের স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
নারীর সকল স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য
নারীর সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
নারীর সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
র্দীর্ঘক্ষন সহবাস করতে না পারার সমস্যা ও তার মেডিকেল সমাধান নিয়ে প্রশ্নোত্তর!
যৌন সমস্যা ও তার সমাধান
সহবাসের স্বাভাবিক নিয়ম
সহবাসের আগে ও পরে করনীয়
সহবাস