Subscribe:

আমি একজন মায়ের গল্প বলতে চাই

সাফিয়া বেগম,ছোটখাট গড়নের একজন আদর্শ বাংগালী মা।তৎকালীন সময়ের অন্যতম ধনী প্রকৌশলী ইউনুস সাহেবের স্ত্রী।এই মায়ের কোলজুড়ে প্রথম যে সন্তানটি আসেন সেটি ছিল মেয়ে।আদর করে মেয়ের নাম রাখা হয় বিন্দু।সাফিয়া বেগমের জান ছিল ছোট্ট মেয়েটি।কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস,মেয়েটি খুব অল্প বয়সেই মারা যায়।মা দুঃখে শোকে ভেঙ্গে পড়েন।এর কিছুদিন পর ১৯৪৬ সালে জন্ম হয় আজাদের।


আজাদ এলভীস প্রিসলির বিশাল ভক্ত।গান শুনে,বই পড়ে,নাজ সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যায় বারো আনা টিকেটের পয়সা দিয়ে।সাথে তার শিষ্যের মত থাকে খালাতো ভাই জায়েদ।মা সাফিয়া বেগম তার এই ছেলেটিকে অসম্ভব ভালবাসতেন।নিজের হাতে না খাইয়ে দিলে মনে করতেন "আমার বাছা তো কিছুই খায়নাই।ছেলেতো আমার মাছটাও বাছতে পারেনা"।
এভাবেই আদরে আদরে মানুষ হয় মুক্ত বিহঙ্গের মত ডানা মেলে ভেসে বেড়ানো ছেলেটি।

একসময় তিনজনের এই ছোট্ট সংসারে আগুন ধরে যখন আজাদের পিতা তারই এক দুঃসম্পর্কের ভাইয়ের বউকে বিয়ে করে ঘরে আনেন।মা সাফিয়া বেগম সেই যে আজাদকে নিয়ে ইস্কাটনের রাজপ্রসাদ ত্যাগ করেন আর কোনদিন ওদিকে যাননি।প্রচন্ড জেদী এই মা তার স্বামীকে কোনদিন এই কাজের জন্য ক্ষমা করেননি।আমৃত্যু তিনি নিজের মুখ একবারো স্বামীকে দেখাননি।

ধীরে ধীরে আজাদ বড় হয়,আই.এস.সি পাশ করে।আর ততদিনে তার পিতাও বুঝতে পারেন ছেলে আর মা কোনদিন তার বশ্যতা শিকার করবেনা।একসময় মা সাফিয়া বেগমকে গলাবার জন্য,তিনি আজাদকে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে পাঠান।মা দেখলেন উত্তল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি আর গোলাগুলিতে মত্ত।সেখানে আদরের একমাত্র ছেলেকে তিনি কি করে পড়ান?যদি কোন অঘটন হয়?অবশেষে তাই মায়ের ইচ্ছায় আজাদ করাচি চলে যায় ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য।

করাচি গিয়ে আজাদ দেখতে পায় কি নিদারুণ বৈষম্য চলছে পশ্চিমের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের।৯৪ ভাগ পশ্চিমের জন্য বরাদ্দ রেখে মাত্র ছয়ভাগ দেয়া হয় পূর্বের অবহেলিত জনগণের জন্য।আজাদ জানতে পারে এই পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাদেরকে ঠিকমত মুসলমান ভাবতেই নারাজ।যখ্নই জানতে পারে আজাদ পুব থেকে এসেছে কেমন যেন একটা অবহেলা দেখতে পায় সে ওই পশ্চিমাদের চোখে।ভাল লাগেনা আজাদের এই দেশ।বারবার ফিরে আসতে ইচ্ছা করে বাংলার মাটিতে।তার মাকে লিখে জানায় "মা এইটা আমার দেশ না।আমার দেশ ওইখানে যেখানে তুমি আছো।"

একসময় বি.এস.সি শেষ করে মায়ের অসুখের খবর পেয়ে দেশে ফিরে আসে আজাদ।মা তখন মালিবাগের এক ছোট্ট বাসায় ভাড়া থাকে।আজাদ বুঝতে শিখে তার মা আট দশটা মায়ের মত নয়।শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আসেন মাঝেসাঝে মাকে দেখতে।তিনি দেখতে পান এই নরম কোমল দেখতে মহিলাটি আসলে কতটা দৃঢ়,যে স্বামীর কাছে কখনো হারতে রাজি নয়।

একদিন সেই ভয়াল রাত আসে।ওই বিভৎস ২৫শে মার্চের রাত।স্বচক্ষে আজাদ এক ভয়াবহতা,এক নিঃশংসতা দেখতে পায়।সেই রাতে আমাদের দেশের সোনার ছেলেগুলোকে কিভাবে,কতোটা বর্বরের মত পাকিস্তানি খুনি জান্তারা হত্যা করে তা কখনো কেউ কোন ভাষায় বোঝাতে পেরেছিলো তা জানা নেই। মায়ের বুকে লুকানো শিশুটি চিৎকার করে কাঁদে কিন্তু মা যে আর নেই।ওই জন্তুরা যে অনেক আগেই গুলি করে মাকে কেড়ে নিয়েছে তার কাছ থেকে।এখন মা শুধুই এক শরীর,ওতে ভালবাসা ভরা আত্মাটা আর নেই।সেই রাতে ছোট্ট শিশুকেও ছাড় দেয়নি পশুগুলো।শুনেছি আমার দেশের এক ছোট্ট সাহসী শিশুকে গু্লি করার আগ মুহুর্তেও শিশুটি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলছিল "মা বাংলা,জয় বাংলা"।
গর্ব হয় যখন মনে হয় আহ! কি অদ্ভুত সাহসী সন্তানদের দেশেই না জন্ম নিয়েছি এই আমরা।


আসল কথায় ফিরে আসি।যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে আজাদ নিজেকে ধরে রাখতে পারতোনা।সেসময় আজাদের এক দুঃসম্পর্কের মামা এসে জানায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের বিবরণ।রাস্তাঘাট,লঞ্ছ টার্মিনাল সবখানে রক্তাক্ত ভয়াবহতা।ওরা বাঙ্গালির রক্ত চায়....শুধু রক্ত।রাজারবাগ পুলিশ লাইনে প্রতিরাতে ওই পশুরা ধরে নিয়ে আসে অনেক অনেক মা বোনকে।আজাদের মামা সেখানেই থাকতো পুলিশে চাকরি করার সুবাদে।পাকিস্তানি পুলিশ সারারত অপেক্ষায় থাকতো কখন নারী ভর্তি ট্রাক আসবে।সেই সব বন্দি নারী্দের কারো কারো কাধে ব্যাগ ঝুলানো থাকতো।দেখেই বোঝা যেত এরা বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।এরপর......বলতে চাইনা।

আজাদের মামার মত আরো যারা বাংগালী পুলিশ ছিলেন তারা মুখ বুজেঁ কাঁদতো যখন সেই অসহায় নারীদের চিৎকার ধ্বনি শুনতে পেতো।আজাদ শুনতো আর বলতো "এ কী হচ্ছে,এটা হতে দেয়া যায়না"।
মা সাফিয়া বেগমের দুচোখ গড়িয়ে জল নামতো।মায়ের সর্বসময়ের পরামর্শদাতা জুরাইনের পীর বললেন "নারীদের উপর অত্যাচার হইতেছে,এই যুদ্ধ পাকিস্তানিরা জিতবোনা"।
মা আর মায়ের ছেলে আজাদ স্বপ্ন দেখেন,এক সুন্দর দেশের,আপনার আমার বাংলাদেশের।

হঠাৎ একদিন মুক্তিযোদ্ধা কাজী কামাল এর দেখা পায় আজাদ,জানতে পারে তার গেরিলা ট্রেনিং এর কথা।মনে মনে ঠিক করে যুদ্ধে যাবে সে।যুদ্ধকালীন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্র লুকানোর জন্য আজাদদের বাসা ব্যবহার করা হতো।শহিদ জুয়েল,বাচ্চু,কাজী কামাল এমন আরো বীরেরা অপারেশন না থাকলে আশ্রয় নিতে আজাদদের বাসায় উঠতো এবং তাদের বিভিন্ন অপারেশনের গল্প আজাদের সাথে করতো।আজাদ একবার সাহস করে বলে ফেলে "আমিও তোমাদের সাথে যুদ্ধে যাব"।
আজাদ জানতো সে তার মায়ের একমাত্র ছেলে।তবুও সাহস করে সে তার মাকে জানায় "মা তুমি অনুমতি দিলে আমি যুদ্ধে যেতে চাই"।
মা কিছু বললেন না।গেলেন জুরাইনের পীর সাহেবের কাছে।পীর সাহেব বললেন "ওরে যুদ্ধে যাইতে দাও।ও ফিরা আসবো।আর তুমি না করলেও লাভ নাই।দেশের এই অবস্থায় কোনো পোলাই ঘরে বইস্যা থাকতে পারেনা"।
আজাদের মা একথা শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হলেন।পরদিন ছেলেকে বললেন "দেশটাকে স্বাধীন করতে হবে।তুই বাবা যুদ্ধে যা"।
মার অনুমতি পেয়ে শুরু হয় আজাদের যুদ্ধ।


শহীদ জুয়েলের ব্যাপারে কিছু না বলে পারছিনা।যুদ্ধের আগে তার মূল পরিচয় ছিল তিনি একজন ক্রিকেটার।মারদাংগা ব্যাটসম্যান হিসেবে তার বেশ সুনাম ছিল।সবর্দাই হাসিখুশি এই মানুষটি সারাক্ষণই মজার মজার কৌ্তুক করে সহযোদ্ধাদের আনন্দ দিতেন।কোন এক অপারেশনে তার হাতের তিনটি আঙ্গুলে গুলি লাগে।পরে নিরাপদ স্থানে নিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় "খুব কি ব্যথা লাগছে?"।
মহান যোদ্ধা উত্তর দেন "হেভি আরাম লাগতেছে।দেশের জন্য রক্ত দেয়াও হইলো,আবার জানটাও রাখা হইলো।কইয়া বেড়াইতে পারমু দেশের জন্য যুদ্ধ কইরা আঙ্গুল শহীদ হইছে"।
পরবর্তিতে এই মহান মুক্তিযোদ্ধাকে স্মরণ করে চালু করা হয় "শহীদ জুয়েল স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট"।

১৯৭১ সালের ২৯শে আগস্ট,আজাদ ও তার বন্ধুরা আজাদের বাসায়।বাড়ির সবাই যখন ঘুমে তখন পাকিস্তানি হানাদাররা অতর্কিত হামলা চালায় বাড়িতে।ধরে নিয়ে যায় শহীদ আজাদ,শহীদ জুয়েল সহ বেশ কয়েকজনকে।একমাত্র পালিয়ে আসতে পারে কাজী কামাল।আজাদের মা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে দেখেন তার একমাত্র আদরের ধনটিকে কি করে মারতে মারতে তুলে নিয়ে গেল পাকিস্তানি বর্বরেরা তাদের জীপে করে।রক্তাক্ত জায়েদ আর চঞ্চল পরে আছে ঘরের এক কোণায়।মা আর সইতে পারলেন না।চেতনা হারিয়ে মাটিতে মুর্ছা গেলেন।এই ঘটনা যখন বাংগালি বীর সেনা মেজর হায়দারের কাছে পৌছায় শক্তসমর্থ মানুষটি বালিশে মুখ লুকিয়ে চিৎকার করে কেঁদে বলে উঠেন "মাই বয়েস,মাই বয়েস......"।

শহীদ আজাদকে যে কারাগারে বন্দি রাখা হয় সেখানে শহীদ রুমি,তার ভাই জামী ও পিতা শরিফ ইমাম সাহেবও ছিলেন।সবার উপর কিছুক্ষণ পরপর পাকিস্তানি সৈ্ন্যরা এসে নির্মম নির্যাতন করে যেত।একসময় আজাদের ডাক আসে।অবর্ণাতীত অত্যাচার চালানো হয় তার উপর,কিন্তু কিছুই সে বলেনা।তাকে জিজ্ঞেস করা হয় "তোমার মা বললে সব কথা বলবে?"।
আজাদ মাথা নাড়ে।
এরপর আজাদের বাসায় পাকিস্তানি এক অফিসার অন্য এক রাজাকারকে নিয়ে মা সাফিয়া বেগম এর সাথে কথা বলেন।তাদের কথোপকথন ছিলো অনেকটা এমনঃ

"আপনি আজাদের মা?"
মা বলেন "জ্বী"
"কালকে আপনি রমনা থানায় যেয়ে আপনার ছেলেকে বলবেন যেন সে যা জানে সব বলে দেয়।তাহলে আপনার ছেলেকে আমরা ছেড়ে দেব।ঠিক আছে?"।
"জ্বী"।

পরদিন মা দেখা করতে যান তার প্রাণপ্রিয় সন্তানের সাথে।আজাদের সারা মুখে,শরীরে অত্যাচারের দাগ দেখে ভিতর ভিতর মায়ের রক্তক্ষরণ হয় কিন্তু তিনি কান্না গোপন করে রাখেন যেন ছেলে কষ্ট না পায়।আজাদ তার মাকে বলেন "মা দুইদিন ধরে ভাত খাইনা।তোমার হাতের ভাত খাইতে ইচ্ছা করছে।কালকে একটু ভাত নিয়া আইসো"।
মা জিজ্ঞেস করেন "তুমি কি তোমার বন্ধুদের খবর ওদেরকে বলে দিয়েছ?"

আজাদ বলে "ওরা অনেক মারে মা,আর জানতে চায় সবার কথা।আমি কিছু বলিনাই"।

জাহানারা ইমাম যেমন তার ছেলে রুমিকে বলেছিলেন "যা তোকে দেশের জন্য কুরবানী দিলাম",সাফিয়া বেগম যুদ্ধে যাওয়ার সময় আজাদকে এমন বলতে পারেন নাই।তার যে একটি মাত্র সন্তান,এই একটা বুকের ধন ছাড়া আর যে কেউ নাই তার।কিন্তু সেদিন জেলখানায় মা বুকে পাথর বেঁধে বললেন "যখন ওরা মারে তখন শক্ত হয়ে থেকো।তোমার বন্ধুদের কথা বলোনা"।

পরদিন মা যান তার ছেলের জন্য ভাত নিয়ে।কিন্তু ছেলেকে আর পাননা।রমনা থানা,তেঁজগাও থানা দুদিন ধরে হাতে ভাত নিয়ে তিনি ছেলের খোঁজে ঘুরতে থাকেন কিন্তু ছেলেকে আর পাননা।একসময় দেশ স্বাধীন হয়।সবাই বলে আজাদ শহীদ হয়েছে।কিন্তু মায়ের মন মানতে পারেনা।তিনি বিশ্বাস করেন,আজাদ আসবে ফিরে,বুকের ধন বুকে ফিরে আসবেই।জুরাইনের পীর সাহেবও বলেন "আজাদ ফিরা আসবো"।

এভাবেই অপেক্ষা করতে করতে ১৯৮৫ সালের ৩০শে আগস্ট মায়ের জীবনাবসান হয়।এর ঠিক ১৪ বছর ১ দিন আগে ১৯৭১ এ আজাদকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায়।

এই ১৪ বছর মা একটিবারও ভাত মুখে দেননি।রুটি খেয়েছেন,পাউরুটি পানিতে ভিজিয়ে খেয়েছেন,কিন্তু ভাত কখনোই নয়।কারণ তার আদরের ছেলেটি যে ভাত চেয়েও খেতে পারেনি।

এই ১৪ বছর মা একটিবারও বিছানায় মাথা দেয়নি।নিচে শুয়ে রাত পার করে দিয়েছেন,বালিশের বদলে মাথায় দিয়েছেন পিঁড়ি।কারণ তিনি দেখেছেন তার আদরের ছেলেটি কি করে বন্দিখানায় নোংরা মাটিতে শুয়ে ছিল।

এই ১৪ বছর মা অনেক কষ্ট করে দিনযাপন করতেন।একটি বস্তিবাড়িতে খেয়ে না খেয়ে থেকেছেন।সন্তানের বউয়ের জন্য ১০০ ভরি গয়না রেখে দিয়েছিলেন পরম যত্নে,যদি সন্তান ফিরে আসে এই আশায়।কখনো তাতে হাত দেন নাই।

মৃত্যুর আগে তার ভাগ্নেকে বলে গিয়েছিলেন "আমার কবরের উপর লিখে রেখ আজাদের নাম,আর কারো নয়।"

অনেকে বলেছিল স্বামীর নাম দেয়ার জন্য,কিন্তু জায়েদ তা হতে দেয়নি।মা যা বলেছে ঠিক তাই করা হয়েছে।আপনারা কেউ যদি জুরাইনের কবরস্থানে যান তাহলে মায়ের শ্বেতপাথরে সাজানো কবরের উপর লিখা পাবেন "শহিদ আজাদের মা"।

মারা যাওয়ার আগে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম মাকে বলেছিলেন তাকে নিয়ে লিখালিখি করবেন।মা রাজী হোন নাই।মা এইসব প্রচার প্রচারণা পছন্দ করতেন না।
*********************************************************************

এই লিখাটা লিখেছিলাম কোন এক গভীর হাতে আজ থেকে বছর তিনেক আগে।লেখক আনিসুল হকের মা বইটা পড়ে মনে হয়েছিলো একটু ছোট্ট করে সবাইকে এই মায়ের কথা জানানো দরকার। কারণ একটি চিঠি যাতে আজাদ লিখেছিল,

"মা তুমি কখনো আমাকে একটুও মারোনি।তোমার মত মা কি আর হয়।আমি যদি কখনো অনেক বড় হই সেদিন তোমার কথা সবাইকে জানাবো।"

আমি যখন প্রথম মা বইটি পড়ি আজ থেকে তিন বছর আগে তখন নিজেকে মনে হচ্ছি্ল এই মায়েরই একজন সন্তান।কেননা এমন মায়েদের জন্যই তো আজকে আমি এই দেশে,স্বাধীন বাংলার পিচঢালা রাস্তায় হেটেঁ চলতে শিখেছি।তাই উনি শুধু শহীদ আজাদ নন আমাদের সকলের মা।মাকে যারা কাছে পেয়েছিলেন তারা সবাই উনাকে ডাকতেন "আম্মা" বলে।কেননা মা যেভাবে সবার দিকে খেয়াল রাখতেন,অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের যত্ন করতেন তা উনাকে একজন চিরন্তন মমতাময়ী মায়ের মতই ইতিহাস এঁকে রেখেছে।

আবারো জানাচ্ছি আমার এই লিখাটি সম্পূর্ণই লেখক আনিসুল হকের "মা" থেকে নেয়া।লেখার সুবিধার্থে কিছু অংশে নিজের মত ভাষা ব্যবহার করেছি।আসলে বইটি পড়ে কেন যেন আমি নিজের মধ্যে শহীদ আজাদকে দেখতে পাচ্ছিলাম।দেশের এই সেরা সন্তানটি আমাদের বাংগালী সবার মাঝেই হয়ত লুকিয়ে আছে।গর্ব হয় যখন মনে হয়,শহীদ আজাদ তো আমারই এক ভাই।তাই মায়ের কথা বলার যে স্বপ্ন আজাদ দেখেছিলেন,লেখক আনিসুল হকও তা দেখেছিলেন,লিখাটি পড়ে আমিও তাই দেখতে চাইলাম।

আবারো বলতে চাই একজন,শুধু একজন মানুষকেও যদি জানাতে পারি আমাদের এই মমতাময়ী মায়ের কথা আমি সার্থক।


সাদ আহাম্মেদ

No comments:

Post a Comment