Subscribe:

এখন সময় যুদ্ধে যাবার...

‘’ মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে
এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই,
উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো
আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ
শুধু যদি নারীকে সাজাই…’’

...    
যুদ্ধে যাবার  সময় ছেলেটা দেখতে পায়  ফুলের বাগানে দুটি ছেলেমেয়ে সব ভুলে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।তারা  একে অপরের চোখে পৃথিবীর  সব আনন্দ খুঁজে।তাদের পেরিয়ে যাবার সময় তার চোখে অনুমোদন বা অননুমোদনের ভাব কোনটাই খেলা করেনা।করার জন্য তার এর থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ এ কালো রাজপথ ধরে  সে এগিয়ে যায়।সামনে তার জন্য অনেকে অপেক্ষা করছে।পরনের শার্ট ঘামে ভিজে গেছে,লোনা জল চোখে পড়ে চোখ জ্বালা করছে।এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবেই কোন মেয়ে তাকে সুদর্শন বলবে না।‘আচ্ছা আমি কেন যাচ্ছি?’,ভাবে সে।সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা ছোট্ট দেহটার ছবি তাকে উত্তর দিয়ে দেয় নিমেষে।ভাবতে ভাবতে সে পৌঁছে যায় তাদের কাছে।

পিচ ঢালা উত্তপ্ত  রাজপথের উপর তারা পরস্পরের হাত শক্ত করে ধরে।তাদের দেখলে অত্যাচারিতরা আশার আলো পায়,আর অত্যাচারীরা পতনের পূর্বাভাস।তাদের সম্মিলিত শ্লোগানে অত্যাচারীর সিংহাসন কেপে উঠে।তাদের বাধা দিতে আসা ভিতু কয়োটের দল ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।তাদের শ্লোগানে হাজার বছর ধরে জমা পুরনো সংগ্রাম গুলো জীবন পায়,স্বাধীনতার সংগ্রাম।এই মুহূর্তে তারা হাজার বছরের বিপ্লবীদের বর্তমান সময়ের প্রতিনিধি।

ভিতু কয়োটের দল এবার সংখ্যায় আর অস্ত্রে  সজ্জিত হয়ে আসে।ওরা তাদের চোখে ভয় দেখতে চায়,কিন্তু বিনিময়ে তাদের স্লোগান তীব্রতর হয়।সংখ্যায় ভারি হলে কয়োটের দল একটা সিংহকেও ধরাশায়ী করতে পারে।শক্ত ব্যাটনের আঘাতে তাদের দেহ ক্ষতবিক্ষত হয়,রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ।তারা দাড়িয়ে থাকার আপ্রান চেষ্টা করে।অনেক বছর আগে তাদের দেশের পূর্বপুরুষরাও একদল হায়েনার বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিল,অস্ত্রের হুমকি তাদের পরাজিত করতে পারেনি।তারাও পরাজিত হয় না,কিন্তু তাদের নশ্বর দেহ হার মানে,সে পা ভেঙ্গে পড়ে যায়।রাস্তায় লুটিয়ে পড়ার আগে তার প্রিয় মানুষটার মুখ চকিতে তার মনে পড়ে।

তাদের লুটিয়ে পড়তে দেখে নির্জীব জনতার মধ্যে জীবন সঞ্চার হয়।ক্ষুব্ধ জনতা ছুটে আসে কয়োটের দলের দিকে।এই জনতাকে রুখবে এই সাধ্য কোন অত্যাচারীর নেই।কয়োটের দল আবার পালিয়ে যায়।জনতা পরম মমতায় নিস্তেজ শরীরগুলোকে আগলে রাখে।তাদের শুশ্রূষা করে।তাদের ক্ষতবিক্ষত মুখে এখন বিজয়ের হাসি....

যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার সময় ছেলেটা দেখতে পায় ফুলের বাগানে দুটি ছেলেমেয়ে সব ভুলে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।তারা একে অপরের চোখে পৃথিবীর সব আনন্দ খুঁজে।যুদ্ধে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে,কিন্তু তাতে ফুলের বাগানের কোন ক্ষতিই হয়নি।তাদের পেরিয়ে যাবার সময় তার চোখে অনুমোদন বা অননুমোদনের ভাব কোনটাই খেলা করেনা।

আগামীকাল এই পথ ধরে সে আবার আসবে।তাকে আসতেই হবে,তার কাঁধে পূর্বপুরুষের অনেক রক্তের ঋণ জমা আছে ....

-হাসান

ফেসবুক আইডি:রেইন ফরেস্ট 

No comments:

Post a Comment