Subscribe:

বুকের মাঝে জোনাক জ্বলে, জোনাক নিভে যায়

রিহানের সাথে কখনোই দেখা হয়নি অনুশিলার। দেখা হয়নি সামনাসামনি তার চুল, চোখ, হাসি, ভ্রুর ভঙ্গি , তার হঠাৎ চমকে ওঠা, তার অকারণ গমগম হাসি, তার সিরিয়াস মুখে ফান করা, তার মন খারাপ করা, কিন্তু সব ভেবে নিতে পারে সে। সে কেমন করে কথা বলে, কি বলবে কোনটার পর কোনটা,  কখন বলবে কথা শেষ, সব। অনেকদিন ধরে চলছিল সম্পর্কটা, নেটে আর এক কি দুবার দূরভাষে।


দিন রাত্রি অন্তহীন কথা, প্রতিজ্ঞার পর প্রতিজ্ঞা, সারা জীবন একসাথে কাটানোর, মান অভিমান, আদর, হাসি মজা পেরিয়ে একটু টুকটাক রাগারাগি, ঠোকাঠুকি - এই সব পালা পেরিয়ে ব্রেক-আপ। হঠাৎ ছিঁড়ে গিয়েছিল রিলেশনটা। নতুন কাউকে পেয়েছিল হয়তো রিহান, নতুন কারো সাথে কথা, নতুন রহস্য উন্মোচন, নতুন মন জেতার খেলা। হটাত এক সকালে ছিঁড়ে দিল তাই তার ডানা,  ভেঙ্গে দিলো  অনেক কথার উপর গড়ে ওঠা শক্ত সেতু । তার অতীতের অন্তহীন স্বপ্ন, বর্তমানের অস্তিত্ব আর ভবিষ্যতের সব ভালবাসার ক্ষমতাকে দলিত মথিত করে, রিহান চলে গেলো। অনুশিলা কাঁদেনি, পেছন ফিরে ডাকেনি, একবার ও থাকার জন্য সাধেনি।   


আজ সেই রিহান তাকে ডেকেছে। অনেক অনেক দিন পর। মাঝে অবহেলায় পরে আছে দীর্ঘ অনেক কটা বছর । এখন সে অন্য কারো বউ। তারপরও এই হলদে রঙা পাখির পালকের মত নরম, কোমল, মায়াময় বিকেলে, তেপান্তরের মাঠের মত মাঠে দাঁড়িয়ে তার বুক কাঁপে। সেই কিশোরী বেলার মত। শঙ্কায়, ভাবনায়, আকাঙ্ক্ষায় , আবেগে। মাঠে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য কাশফুল। সাদা সাদা কাশফুল এর উপর ছড়িয়ে আছে সাদা প্রশস্ত আকাশ। তাতে অনেক রঙের মেলা। নীচে কাশফুলের  মাঝে উঁকি দিচ্ছে নাম না জানা হাজার রঙের বুনো ফুল। হলদে, জাফরান আর বেগুনি। গাঢ় নীলচে রঙের ফুল ও আছে কিছু। ঘন সবুজ ভেজা ঘাস। বৃষ্টি হয়েছে কিছু আগে বুঝি। কি এক পবিত্র অদ্ভুত বিষণ্ণতা সবখানে। ভেজা ঘাসে, ভেজা ফুলে আর তার ভেজা মনে।


সকাল থেকেই আজ চমক ছিল। তার মাথার কাছে মুঠোফোনে উঠে এসেছিল সেই নাম। কাঁপছিল সে। ভেসে আসছিল সেই কণ্ঠ। মন জাগানিয়া, ঘর ভাঙ্গানিয়া। তার অদেখা স্বপ্ন পুরুষ। তার গহীন ঘোর ।  যে তাকে কাঁদায়, ভাসায়, ছুঁড়ে ফেলে দেয় অসীম শূন্যতায়। অস্থির করে, অশান্ত করে। কিন্তু তার মনে সান্ধ্য প্রদীপ জ্বেলে রাখে। তির তির করে কাঁপছিল সে, পাশে ঘুমন্ত আসিফ। সে কথা বলতে পারেনি। ত্রস্তে উঠে গিয়েছিল, ফোন না ধরে বাথরুমে গিয়ে অস্থির হাতে দুচোখ জলে ভিজিয়েছিল । দেখা হয়নি বলেই হয়তো তার ঘোর কাটেনি, তার মন থেকে স্বপ্ন পুরুষ এতোটুকু ম্লান হয়নি। তার চোখের জল শুকায়নি আজ, একটা অস্থির অভিশাপের মত তার আত্মার কান্না হয়ে মিশে আছে সেই মুখ। সে অনুনয় করেনি, কাছে ডাকেনি, কিন্তু ভুলে যায়নি। প্রতি পলে লালন করেছে তাকে, নিজের অজান্তে, সবার অলক্ষ্যে। তার এই গোছানো সংসারের নিভৃতে। রিহান ডাকেনি আর কখনো । আজ হটাত কেন? কি বলবে সে ?   


আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বৃষ্টি ছিল ভেতরে আর বাইরে। সে সদ্য সোনালি ভোরে নির্বাক হয়ে বসে ছিল। অপেক্ষা করছিলো কি? আরেকবার আহবানের? এক যুক্তিহীন আবেগে, তীব্র প্রতীক্ষায়। তারপর এলো আবার সেই ডাক। বৃষ্টির অঝোর বর্ষণের মত। সে ভাবছিল ফোনটা ছুড়ে ফেলে দেয়, গুড়িয়ে দেয় , আবার কি এক তীব্র আবেগের কাছে সে পরাজিত হয়। সে যে এত আকুলভাবে এই ডাকের প্রতীক্ষায় ছিল, সে বুঝতে পারেনি। সে কথা বলেনা কিন্তু  তার কণ্ঠ শোনে । তারপর ফোন রেখে দেয়। কথা খুঁজে না পেয়ে। তার ও পর, কাঁদে অন্তহীন। ফোন পড়ে থাকে অবহেলায় তার ঘরের অন্তহীন ঐশ্বর্যে ।  তার সুখ আর সংসারকে তীব্র উপহাস করে। সে সহ্য করতে পারেনা, শুধু ত্রস্তে ছুটে যায় বিছানায়,  আলিঙ্গনে জড়ায় আসিফকে, তার বুকে মুখ ঘষে , তার চুলে বিলি কাটে আর কাঁদে। ভেতর ভেতর। উপরে সে হাসে, বলে, "উঠো , সকাল হলোনা ? আর কত ঘুমাবে?"


তার প্রতীক্ষা বাড়তে থাকে । আহবানের। অফিসেও নিরন্তর কাজের ফাঁকে ফাঁকে । কি বলতে চেয়েছিল রিহান? সে কখনোই নিজের কাছে নিজের প্রতিজ্ঞা ভাঙবে না , ডেকে কথা বলবেনা কিন্তু ডাকলে ফেরাবে এমন সাধ্য তার কই? আর তাই সে কাজে মন দিতে ভুলে যায় , নিজেকে অভিসম্পাত দেয় আর বেভুল হয়ে রিহানের কথা ভাবতে থাকে। তার প্রথম আবেগ। তার প্রথম তীব্র দহন আর যন্ত্রণার ইতিহাস। তার ভুলের কাহিনী। তার পরাজিত হবার কথকতা।  

বার্তা আসে আবার। ঘোর দুপুরে। তপ্ত হৃদয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে। রিহান লিখেছে :

‘অনেক দিন চলে গেছে। আসনি। ফিরে ডাকোনি।  ভুলে গেছ? শুধু একবার দেখবো। একবার। ছোঁবো না।। দাবি করবোনা কিছুই। অনেক দূরে রবো, ভেবোনা, কিছু  উল্টে পাল্টে দিবোনা। শুধু কিছু কষ্টের ছুটি করবো। অনেক বড় ভুলের। জীবন কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। তোমাকে । আমার দোষে। আমারই ভুলে। আসোনা একবার। আসবে? আজকে বিকেলে ? জানাও। জোর করছিনা । অধিকার নেই। তোমার কাছে একটি বিকেল ছাড়া চাইবার আর কিছু নেই। অধিকার নেই’।

কি অদ্ভুত লেগেছিল তার।  আর কি মুক্তি। তার অন্তহীন অবিশ্বাস্য অসহনীয় প্রতীক্ষার। তার প্রার্থনার। বেলা বাড়ছিল । তার মনে দ্বিধা ছিল। সংশয় এর দেয়াল ছিল। সে ফেরার পথ ধরেছিল। আবার ফিরে এসেছিলো সেই পথে। কি এক ঘোরে। আবার ডাক এসেছিলো । আসতে পারবে তো ? দেরি হবে না তো ? প্রব্লেম নেই তো? সে আশ্বস্ত করছিল। সে আসবে। তার কাছে। মনে দ্বিধা গলায় শঙ্কা ছিল। কি হয়ে গেলো তার ? সে কি পাপ করল ? সে কি খারাপ হয়ে গেল? সে কি আসিফের অবমাননা করলো ? তক্ষুনি ফোন আবার। সুতরাং সে নিরুপায় হয়। সে বিভক্ত হয়, দ্বিচারিণী হয়, আর নিজের আত্মার কাছে লুকানোর পথ খুঁজে বেড়ায়।

আজ এই ভর বিকেলে অন্তহীন কষ্টে আর কল্পনায় তার শুভ্র শাড়ীর আঁচল ওড়ে। ওড়ে তার স্বপ্ন। এই সোনা সোনা আলোতে, অসংখ্য প্রজাপতির বর্ণময় বিচরণে। সে প্রতীক্ষা করে হৃদয় মন উজাড় করে এই বিকালের মায়াবী আলোতে।  কখন এসে দাঁড়াবে গহীন স্বপনের পুরুষ। দেখা হয়নি আগে, হেঁটে আসবে সে যেন কোণ অলীক মায়ার স্বপ্নে। তার হবে গহীন মায়ার চোখ, এলোমেলো চুল, আর গভীরতম দৃষ্টি। একটিবার দেখা কাঙ্ক্ষিত ছিল।  এক জনমের পিপাসা ছিল। সেই পিপাসার জলে টলমল করে সে। তার স্বপ্ন পুরুষের প্রতীক্ষা করে সে, যে সবার চেয়ে আলাদা, অনেক আগেই চলে এসেছে সে। কি এক অসম্ভব আবেগে, কি দারুন ব্যাকুলতায়। তাকে একটি কবিতা শোনাবে সে । নিজেই লিখেছিল। ছেড়ে যাওয়ার পর। শুধু সেই কবিতা শোনাবে সে । আর কিছুনা। ছোঁবে না, কাছাকাছি হবেনা। শুধু একটি কবিতা। তাতে কি সে অপরাধী হয়ে যাবে? তার কবিতা কি পাপী হয়ে যাবে? সে বুঝতে পারেনা। তার হৃদয় জুড়ে উঠে আসে শুধু সেই কথামালা :

"বুকের মাঝে জোনাক জলে জোনাক নিভে যায়

জোনাক তুমি কোথায় আছ কাহার আঙ্গিনায়

জ্বলে নিভে কোণ আঙ্গিনায় তোমার নিঠুর আলো

জোনাক আমি কষ্টে আছি তুমি কেমন ভাল?"

তার কান্না আসে। স্তব্ধ সময় গড়িয়ে যায়। মেঘের পর মেঘ জমে, তার কান্না সব অদৃশ্য বৃষ্টির জলের সাথে মিশে যায় ।

রিহান আসে তখন সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই। আকাশে শেষ সূর্যের রক্তিম আলো। সেই আলোর ক্যানভাসে স্বপ্ন পুরুষ হেঁটে আসে। সামনে এসে দাঁড়ায়। একটি আকাশ নীল টি-শার্ট পরনে তার। বৃষ্টি ধোয়া আকাশের পটভূমিতে আরেক আকাশ যেন। অনুশিলা তাকাতে ভুলে যায়। তার দৃষ্টি মাটির ঘাস ফুলে থমকে যায়। সে অনুভব করতে চায় এই বিরল মুহূর্ত। সে প্রান ভরে পান করতে চায় এই ক্ষণের সব বর্ণ, গন্ধ আর সৌরভ। সে শুধু তার ছায়া আর মায়ার জন্য আকুল কামনায় অধীর থেকে অধীরতর হয়। এই মুহূর্তটি তার প্রলম্বিত করে সারাজীবনের দীর্ঘায়ু দিতে ইচ্ছে করে।

স্বপ্ন পুরুষ কথা বলে একসময় । বলে দেরি করে ফেললাম, তাই না? কখন এসেছ তুমি?

অপ্রতিরোধ্য আবেগে কাঁপে তার অস্তিত্ব। তাও সব সাহস জড় করে সে। তার ভাষা হারিয়ে গিয়েছে। তাকে খুঁজে আনে আনাচ কানাচ থেকে। তাও কথা বলা এতো কঠিন! সে বুঝতে পারেনা। আর তাই সে নিজেকে শুধু মাথা নাড়তে দেখে। তার দৃষ্টি তখনো মাটিতে নিবদ্ধ। ঘাস ফুলে, লতায় পাতায় আর একটি কালো প্রজাপতির পাখায়। ডানা ভাঙ্গা প্রজাপতি।

রিহানও থমকে যায় বুঝিবা। স্তব্ধ সময় কাটে। এক মূহুর্ত বা দুই মূহুর্ত । কিন্তু মনে হয় অনন্ত কাল। তাই অনুশিলা চোখ তোলে একসময়। এই নীরবতাকে ভাঙতে। তার মুখ দেখবে এবার, তার শুভ দৃষ্টি হবে, সে ধন্য হবে, পবিত্র হবে। মিলে যাবে এ জীবনের সব পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ । রিহানের শুদ্ধতম চোখের তারায় সে খুঁজে পাবে তার আদর্শ পুরুষ।

একটু হতাশ হয় কি অনুশিলা? একটু চাপা দীর্ঘশ্বাস ধ্বনিত হয় কি তার আত্মায়? স্বপ্নের মত নয়তো সে। একদমই সাধারণ । তার অভিজ্ঞ চোখে মুখে এক অসহনীয় পবিত্রতা নেই, দৃষ্টিতে নেই দুর্লভ কোন বার্তা, শুধু তার চিবুকে ফুটে আছে  পৃথিবীর জটিল থেকে জটিলতর ভাবনার আঁকিবুঁকি । চোখে মেখে আছে ক্লেদ আর ক্লান্তি । তাও অনুশিলা অধীর হয়। নির্নিমেষ অপেক্ষা করে সে আর অলক্ষ্যে  প্রার্থনায় রত হয়। অসাধারণ হোক তার কথা, অটুট থাকুক তার বিশ্বাস আর বেঁচে থাকুক তার স্বপ্ন। যে স্বপ্নে সে কাটিয়েছে তার দীর্ঘ ৯ টি বছরের অসংখ্য বিনিদ্র রাত্রি।  সে চোখ নামায় আবারো । প্রজাপতিটিকে খোঁজে ।

তার স্তব্ধতা সরব করে আবার তাই অপর পক্ষকে। তাকে বলতে শোনে ,

কথা বলছো না কেন? মাঝখানে অনেক কিছু হয়ে গেল। অনেক ঝামেলা। তাই যোগাযোগ করতে পারিনি। রাগ করেছো, না?

একটু থামে এই পৃথিবীরই মানুষটি। আবার বলে আমাকে ভুলে গেছ তাইনা? জানতাম।

একটু থামে । বুঝতে চায় হয়তো তাকে । উত্তরের অপেক্ষা করে,  তারপর রিহান বলে,  বিয়ে করেছো ?

থমকায় অনু এবার। ক্লান্ত লাগে তার । অসীম শ্রান্তি ও । তাও উৎকর্ণ হয় সে । অপেক্ষা করে আরও কিছু শোনার। তার স্বপ্ন পুরুষ এত সহজে বিলীন হওয়ার নয়। সে আপ্রাণ চেষ্টায় রত হয়, খুঁজে পাবার। খোঁজার আর কিছু বাকি আছে কিনা তাও সে বুঝতে পারেনা। শুধু তার কবিতাটির জন্য তার দুঃখ হয় । অর্থহীন মনে হয় । । তার গত হয়ে যাওয়া অনেক ক’টা বসন্তের ফুলের সুবাস নিতে অক্ষমতার জন্য তার নিজের উপর নিজের করুণা হয়।

ক্ষমতাগর্বী পুরুষ এবার বলে আমার জন্য খুব কষ্ট পাও তাইনা? আমিও খুব মিস করি । কি করছো এখন ? কোথায় আছো?

আবার কয়েক মুহূর্ত কেটে যায়। বলে আমি ফিরলাম কাল । তোমাকে মনে পড়তো খুব। দেখতে ইচ্ছে করলো। অনেকদিন বাইরে ছিলাম। ইউকে তে। কিন্তু ভাল লাগেনা । বুঝলাম টাকা পয়সা লাইফের সব না।

অনুশিলা হাসে এবার। তার অসাধারণ মুখশ্রীতে এই সন্ধ্যার বর্ণীল আলো স্বর্গীয় ছায়া ফেলে। কিন্তু কথা বলেনা অথবা বুঝে যায় বলার কিছু নেই তার, বলার মত কেউ সে নয়।  

রিহান অধৈর্য হয় এবার, বলে কি কিছু বলছো না? কেমন আছো ? লিখো এখনো ? আমিতো অন্য রকম হয়ে গেছি। লিখিনা।  অনেকদিন। টাইম পাই না। অনেক বিজি।

রিহান এবার বলে  তুমি দেখতে অনেক সুন্দর। কল্পনার চেয়ে।

কথা বলতেই থাকে স্বপ্ন পুরুষ। মাটির পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে, আরে আস্তে আস্তে খুলতে থাকে তার মাথার ঘোর।

কত কথা কানে আসে। রিহান বলছে বিয়ে করেছিলাম। তোমাকে লুকিয়ে লাভ নেই। বিয়ে করেছিলাম। ব্রিটিশ একজনকেই। বিয়েটা টিকলো না । বাচ্চাটাকেও পেলাম না। জটিল জীবন ।

কি এক  শক্তি বোধ করে সে এবার। বিচ্ছিন্ন করে নেয় নিজেকে। শুধু বলে, আমি যাই । সন্ধ্যা হয়ে গেছে ।

ফেরে সে। রিহানের কাছ থেকে, তার স্বপ্ন পুরুষের আলিঙ্গন থেকে।

রাত নেমেছে ব্যস্ত রাস্তায়। হাজার রঙের খেলা। অনুশিলার বুকেও। একটি মেয়ের গহীন গভীরতাকে স্পর্শ করতে পারবে, এরকম ক্ষমতা পুরুষের কই? তাইত এত অগভীর পুরুষের দল হেঁটে বেড়ায় এই পৃথিবীর পথে পথে, কষ্ট দেয়, মাড়িয়ে দেয় মেয়েদের মন, তারপর বুকে হেঁটে সামনে এসে দাঁড়ায়, নতজানু হয়। কিন্তু খুঁজে পায়না মেয়েদের মন, শরীর খোঁড়ে অকারন, বীজ ছড়ায় আর ক্ষমতা গরবে অহংকারী হয়। মুলত সে পরে থাকে একা, সে আসিফই হোক বা রিহান। সব মিলেমিশে যায় ।

অনেকদিন পর মহাপুরুষের মৃত্যু হয়, আনুশিলা ফেরে। ভর সন্ধ্যায় ।আকাশের মেঘের মত হালকা হয়ে , পাখির মত ভেসে ভেসে। নিজের কাছে। নিজের আত্মার কাছে। নিজের বন্ধু নিজে ছাড়া আর কে হতে পারে। কেই বা হতে পেরেছে কবে?

(কবিতাটির জন্য কৃতজ্ঞতা আমার অগ্রজ ডঃ মুশতাক আহমেদ রানা ভাইয়াকে যে এখন আর কবিতা লেখেনা। তার অসম্ভব সুন্দর কবিতা আসবে আবারো নিরন্তর এই কামনায় আছি  )

                                                              

  সাকিবা ফেরদৌসি
  (মালয়েশিয়া থেকে) 

No comments:

Post a Comment