সেদিন ছিল স্বর্ণার জন্মদিন। স্বর্ণা জানে আবিদ একটু খামখেয়ালি টাইপের। তাই সে নিজে থেকে আমাদের ভার্সিটির ক্যাফে তে এসে তার জন্মদিনের দাওয়াতটা দিয়ে গেল। আবিদের সাথে টেবিলে আমরা যতজন বসে ছিলাম, সবাইকে। বার বার অনুরোধ করে গেল যেন আমরা কোনভাবেই মিস না করি। আমি বুঝতে পারলাম না সেচ্ছায় কেউ কেন একটা লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি না হবে!
স্বর্ণা আর আবিদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক নিয়মে হয়নি। যদিও আদর্শ বিবেচনা করলে এটাকে স্বাভাবিক বলা যেত, কিন্তু সমাজ তো বহু আগেই আদর্শ কে পেছনে ফেলে এসেছে। তাই ওদের পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের মাধ্যমে তৈরী সম্পর্কটাকে অস্বাভাবিক ই বলতে হবে। কোন একটা সোর্স থেকে আবিদের মা এবং স্বর্ণার খালার পরিচয়, সেখান থেকে দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের কথা। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, আবিদ-স্বর্ণা দুজনই একই ধাতুতে গড়া, মরিচাবিহীন। দুজন কোন প্রতিবাদ না করে পরিবারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। সেখান থেকেই ওদের সম্পর্কের শুরু।
স্বর্ণা তার জন্মদিনের উৎসব টা আয়োজন করেছিল শাহাবাগের একটা রেস্তোরাতে। সেখান থেকে আমাদের ভার্সিটি আর ওদের মেডিকেল কলেজ দুটোই মোটামুটি কাছে। প্রায় সন্ধ্যার দিকে গিয়ে আমরা যখন পৌছালাম, স্বর্ণা ওর গুটিকয়েক বান্ধবীদের নিয়ে ততক্ষণে সব রকম সাজানো গোছানো শেষ করে ফেলেছে। আমি অবাক না হয়ে পারলাম না এটা দেখে যে, আমাদের ১২ জনের মধ্যে মাত্র ৫ জন বন্ধুই আসতে পেরেছে। পৃথিবীতে কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে!
স্বর্ণা মেয়েটাকে প্রথম যখন দেখেছিলাম, আমার অনুভূতি ছিল মিশ্র। সে হয়তো দেখতে বিশ্বসুন্দরীদের মতো সুন্দর ছিল না, কিন্তু তার চেহারাটা দেখলেই কেন জানি মায়া মায়া লাগত। মনে হতো, এই মেয়েটাকে যে কষ্ট দিতে পারবে সে অন্য গ্রহের পাষন্ড, পৃথিবীর নয়। তার মুখটা ছিল স্বচ্ছ আয়নার মতো, একেবারেই পরিচ্ছন্ন। আমাদের আবিদই বা কম যায় কিসে? পৃথিবীর যে জিনিসগুলোতে মানুষের রাজ্যের লোভ, যে অর্থ-বিত্ত, মান-সম্মান নিয়ে আমাদের বন্ধুদের মাঝে হরহামেশা টানা হেচড়া- এগুলো পাত্তাই দিত না আবিদ। মুচকি হাসত আর বলত, ‘মানুষ যদি সত্যিটা জানত, তবে কখনোই ভুল করত না। মানুষ যদি ভুল না করত, আমি শিখতাম কি করে?’ ওকে দেখলেই মনে হতো সবসময় কিছু একটা নিয়ে সে ভীষণ চিন্তিত। কিন্তু কারো সাথে কথা বলতে গেলে এমন সুন্দর করে হাসতো, কারও সন্দেহ করারও সুযোগ থাকতো না এই ছেলের কখনো দুশ্চিন্তা হতে পারে।
এ কারণেই আবিদ-স্বর্ণার কোন উৎসব আয়োজন করলেই সবসময় আমি সেখানে উপস্থিত থাকতে চেষ্টা করতাম। স্বর্ণার জন্মদিনটাও ব্যতিক্রম না। হালকা আলো-আধারির মাঝে মোমবাতি নিভিয়ে কেক কাটা আর খাওয়ানোর পর্বটা আমি আমার হাতের ক্যামেরা আর মনের ক্যামেরা দুটোতেই একসাথে তুলে রাখার চেষ্টা করলাম। বিশেষ করে আবিদের স্বর্ণাকে কেক খাওয়ানোর ছবিটা প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের মতো তোলার চেষ্টা করলাম।
মূল খাওয়ার পর্বটা আসতে দেরি ছিল। রেস্তোরার লোকজন তাৎক্ষণিক রান্না করে খাওয়াতে বেশি উৎসাহ বোধ করেন বোধ-হয়। ততক্ষণ কি করা হবে সেটা নিয়ে আলোচনা চলতেই চারপাশ থেকে অনুরোধ আসতে শুরু করল- স্বর্ণার জন্মদিনে আবিদকে একটা গান গাইতে হবে। সবার সামনে, অভিনয় করে করে গাইতে হবে। যেন তেন গান হলে চলবে না, খাঁটি ভালোবাসার গান হতে হবে। আবিদ উঠে দাড়িয়ে কিছুক্ষণ অন্যমনস্ক হয়ে চিন্তা করল, তারপর বলল, ‘গান তো আমি অনেক গেয়েছি তোমাদের সামনে। আজ একটু ভিন্ন কিছু হোক’। বলেই ওর সেই বিখ্যাত হাসিটা দিলো। আমাদের সাথে আমাদের ভার্সিটির কিছু মেয়েবন্ধুও গিয়েছিল, আমি পাশ থেকে তাদের হালকা দীর্ঘশ্বাস শুনতে পেলাম।
আবিদ আস্তে আস্তে স্বর্ণার দিকে এগিয়ে গেল। মাথা খানিকটা ঝুকিয়ে ডান হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল, ‘নাচবে আমার সাথে?’
আশপাশ থেকে কেউ কেউ হাসার চেষ্টা করল, খুব একটা লাভ হলো না। আবিদের কন্ঠস্বরে এমন কিছু একটা ছিল, ব্যাপারটাকে কেউ আর ঠাট্টা হিসেবে নিতে পারল না। স্বর্ণা দীর্ঘক্ষণ আবিদের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর চোখ চিকচিক করতে দেখে আমি মুখ ফিরিয়ে নেই। আনন্দাশ্রু খুব ভয়ানক রকমের ছোঁয়াচে!
স্বর্ণা কিছু না বলে আস্তে দু’তিন বার মাথা ঝাকায়। তারপর আবিদের বাড়ানো হাতটা ধরে সামনের ফাঁকা জায়গাটাতে চলে যায়। আমরা কেউ কোনও কথা বলি না। এতদিন নাটক-সিনেমায় বহুবার এমন দৃশ্য দেখেছি। আজ প্রথমবারের মতো সত্যিকার ভালোবাসা দেখে আমার হৃদপিন্ড দ্রুতগতিতে স্পন্দন শুরু করে। আবিদ পাশের মিউজিক স্টেশনটা ছেড়ে দেয়। নিশ্চুপ নীরবতার মাঝে বেজে ওঠে অমৃত সংগীত- ‘ভালোবাসি…ভালোবাসি…এই সুরে কাছে-দূরে, জলে-স্থলে বাজায়…বাজায় বাঁশি..ভালোবাসি…’।গানের সাথে সাথে তাল দিয়ে চোখে চোখ রেখে একজন আরেকজনের হাত ধরে তাল মেলাতে থাকে অন্য গ্রহের দুজন মানুষ। আমরা হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। কিছুক্ষণ পর আমি স্বর্ণার নীরব কান্নার কারণ খুজতে থাকি, কিন্তু পাই না। কত বিচিত্র ঘটনা ঘটে পৃথিবীতে…
ওরা দুজন নাচল মাত্র দশ মিনিটের জন্য। আমার মনে হলো এক-যুগ পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সেটাকেও অনেক ক্ষুদ্র সময় বলেই মনে হলো। স্বর্ণা আবিদের হাত ছেড়ে দিয়ে চোখের পানি মুছতে থাকে। আবিদ ওকে চোখের পানি মোছার সময় দেয়। তারপর হঠাৎ করেই হাটু গেড়ে বসে স্বর্ণার সামনে। কিছু একটা গরমিল মনে হয় আমার কাছে। স্বর্ণার হাতের তর্জনীতে যে হীরের আংটিটা শোভা পাচ্ছে, সেটা গতমাসে আবিদ ওদের বাসায় গিয়ে ওকে পরিয়ে দিয়ে এসেছিল। এখন এমন আচরণের কি উদ্দেশ্য হতে পারে আমি ভেবে পাই না।
‘তোমার কাছে আমার একটা ছোট্ট অনুরোধ আছে। রাখবে?’ আবিদের কন্ঠে আবেগের ছোয়ার চাইতেও যে জিনিসটা বেশি মনে হলো, সেটা হলো দু:খ। নিদারুণ দু:খ।
স্বর্ণা এবারও শুধু মাথা ঝাকাল। কোনও কথা বলল না।
আবিদ স্বর্ণার চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, ‘ইহকালে যদি আমাদের মিলন সম্ভব না হয়, পরকাল পর্যন্ত তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করবে?’ জীবনে প্রথম আমি আবিদকে কাঁদতে দেখি।
স্বর্ণার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে কান্না ঝরছিল। বৃষ্টির মতো করে। সে আবারও মাথা ঝাকাল। ‘আমি অপেক্ষা করব। তোমার জন্য আমি অনন্তকাল অপেক্ষা করব…’ এরপর আমাদের সকলকে অবাক করে দিয়ে আবিদের বুকে মাথা রেখে কাঁদতে শুরু করল। এ কান্না কিসের কান্না, আমার সে সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। আমি কষ্ট করে দেখতে থাকি। অন্য কারও ক্ষেত্রে হলে হয়তো কেউ কেউ নাক সিটকাত, কিন্তু ওরা দুজন হবু বর-বধূ বলে কেউ কিছু মনে করল না।
স্বর্ণার কান্না কিছুক্ষণ পর কমে আসলো। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলো না। আমরা সবাই নীরবে খেয়ে গেলাম। স্যুপের মধ্যে লবণ কিছুটা কম ছিল, কিন্তু কেউ সেটা নিয়ে উচ্চবাচ্য করল না…
২
আমি আর আবিদ স্বর্ণাকে মেডিকেল কলেজে পৌছে দিয়ে হলে ফিরছি। দুপাশের নারিকেল গাছগুলোর শনশন আওয়াজ ছোটখাট একটা ঝড়ের আগমনী বার্তা আমাদের শুনিয়ে দিয়ে গেল।
‘তুই কেন শুধু শুধু মেয়েটাকে কাঁদাতে গেলি? এসব কথা কি আজকে বলা খুব জরুরী ছিল তোর জন্য?’ আমি রাগত স্বরে বললাম আবিদকে।
‘কেন? তোর খারাপ লাগছে?’ হেসে জিজ্ঞেস করল আবিদ।
‘লাগবে না? এত মায়াকাড়া চেহারার একটা মেয়েকে কাঁদতে দেখলে খুব কষ্ট হয়। আমাদের তো তোর মতো শক্ত মন নেই’।
‘আজ সুযোগ পেলাম, বলে ফেললাম। আর কখনো যদি সুযোগ না পাই…’ বিষণ্ন সুরে বলল আবিদ।
‘কি সব আজগুবি কথা! কয়েকদিন বাদে তোদের বিয়ে। তখন যত ইচ্ছে বলিস। এখন তো…’ আমি কথা শেষ করতে পারলাম না। বারবার মেয়েটার ক্রন্দনরত চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকল।
‘আমার লাইফটাই যে ওরকম দোস্ত। যখনই মনে করি খুব আনন্দের, খুব সুখের কোন একটা কিছু পেয়েছি, তখনই আমার জীবন থেকে কিছু একটা হারিয়ে যায়’। আবিদের কন্ঠস্বর শুনে আমি ভয় পেয়ে যাই। কখনোই আমি ওকে এভাবে কথা বলতে শুনিনি।
‘আমার ইন্টার লাইফটা অনেক কষ্টের মধ্যে গেছে। অনিশ্চয়তা, অনির্ভরতায় খুব কম রাতই আমি ঠিকমতো ঘুমোতে পেরেছি। তাই ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে মনে হলো বুকের ওপর থেকে পাথর সরে গেছে, আমি এখন এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ’।
এসব কথা আমি আগে কখনো শুনিনি আবিদের মুখে। আজ হঠাৎ শুনে থতমত খেয়ে যাই।
‘ঠিক তখন, আমার অন্যতম প্রিয় একজন ভালোবাসার মানুষ, আমার ছোট-খালা, রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেল’। ঠাট্টার হাসি হাসল আবিদ। আমি শুনে বিস্ফোরিত হয়ে যাই!
‘আমি অনেক সময় নিয়ে গুছিয়ে উঠলাম’, আবিদ বলে চলে, ‘ইউনিভার্সিটি ভর্তি হওয়া, পড়াশুনা করা, বাইরে থাকা। বন্ধু বান্ধব যোগাড় করা। সব গুছিয়ে ওঠার পর ভাবলাম আমার সুখী জীবন আজ কানায় কানায় পূর্ণ। ঠিক তখন…’ আবিদ থেমে যায়।
আমি কান খাড়া করে রেখে অপেক্ষা করি। আবিদ আবার বলতে থাকে, ‘ঠিক তখন আমার বাবা হার্টফেল করে মারা গেল। আমার এত বন্ধু, যে যার দিকে চলে গেল। আমি পড়ে থাকলাম একা…’
আমি কি করব বুঝতে পারি না। আবিদকে এই মুহূর্তে সান্ত্বনা দেয়া উচিত। কিন্তু ওর শক্ত ব্যক্তিত্ব দেখে নিজেকে অসহায় অসহায় মনে হতে লাগল আমার।
‘অনেক সময় পর, আমি পেলাম স্বর্ণাকে। যেন স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোন পরী। ওর নিষ্পাপ, পবিত্র আত্মা আমার ভেতর থেকে সব দু:খ ধুয়ে নিয়ে গেল। আমার আবার নিজেকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখী মনে হতে থাকে…’ আবিদের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে।
‘তারমানে তুই বলতে চাচ্ছিস…’ আমি আমার কথা শেষ করতে পারি না। ভয়ের কারণে আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে।
আবিদ আবার বিষণ্ণতা ভরা হাসি হাসে। ‘আমার ভাগ্য আমার সাথে খুবই নির্মম পরিহাস করে আসছে সবসময়। আমি কেন জানি দেখেও দেখিনি, শুনেও শুনিনি…’ আবিদ একটু থেমে যোগ করে, ‘আর কত এড়িয়ে চলব বল?’ আমি কোন উত্তর দিতে পারিনা। শুধু হতবাক হয়ে চেয়ে থাকি।
৩
ওই ঘটনার দিন-তিনেক পর রোড-এক্সিডেন্টে আবিদ মারা গেল। খবরটা পাওয়ামাত্র আমার বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু নিজের চোখে দেখার পর আমার বুকের ধকধক শব্দটা আরও বেড়ে যায়। আবিদ মারা যাওয়ার খবর স্বর্ণা সহ্য করতে পারেনি। ওকে দেখতে আমি যতবার ওদের বাসায় গিয়েছি, শুধু কাঁদতে দেখেছি। এত মায়াময় চেহারার একটা মেয়েকে কাঁদতে দেখলে খুব কষ্ট হয়, আমি তাই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। মাসদুয়েক অবস্থার উন্নতি না দেখে স্বর্ণাকে একটা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়। আমি সেখানেও ওর সাথে একবার দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমাকে দেখেই সে আবার কান্না শুরু করেছিল, জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছিল। আবিদকে ছাড়া যেন ও এক মুহূর্তও স্থির থাকতে পারেনি।
এর কদিন পরই স্বর্ণা ব্রেন হেমারেজ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেল। ঢাকা মেডিকেল এর একটা স্টুডেন্ট কে বাঁচাতে পারল না কোন ডাক্তার। আমি খুব কষ্ট পেলেও কিছুটা সুখ খুজেঁ পেলাম। স্বর্ণা হয়তো আবিদকে দেয়া ওর প্রতিজ্ঞা পালন করতে গেছে। পরকাল পর্যন্ত হয়তো সে আবিদের জন্য অপেক্ষা করবে…
আমি অনেক স্বপ্ন দেখতাম ওদের দুজনকে নিয়ে। ওদের দেখে মনে হতো স্বর্গ থেকে তৈরী হয়ে আসা এক যুগলবন্দী। এই ইট-কাঠের জীবনে ওরা যেন ছিল একটু আশা। ওরা আমাদের সবাইকে স্বপ্ন দেখাত ভালোবাসাময় এক পৃথিবীর। সে সপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস…
রওনাক ইসলাম।
Very Nice Full !!!
ReplyDeletetragedy love....after finish the story tears comes from my eyes
ReplyDeleteআসুন জেনে নিই সহবাসের সময় ছেলেদের কি কি সমস্যা হয় ও তার সমাধান
ReplyDeleteসহবাস সমস্যা
পুরুষের সকল স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
পুরুষের স্বাস্থ্য
পুরুষের সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
পুরুষের স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
নারীর সকল স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য
নারীর সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
নারীর সকল স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যার প্রাকৃতিক ও মেডিকেল সমাধান
নারীর স্বাস্থ্য ও যৌন সমস্যা
র্দীর্ঘক্ষন সহবাস করতে না পারার সমস্যা ও তার মেডিকেল সমাধান নিয়ে প্রশ্নোত্তর!
যৌন সমস্যা ও তার সমাধান
সহবাসের স্বাভাবিক নিয়ম
সহবাসের আগে ও পরে করনীয়
সহবাস