Subscribe:

জীবনের শেষ, স্বপ্নের শুরু...

সকালেই মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল আমার।বাসা ভর্তি লোকজন সব।মা, বাবা, বোন সবাই মিলে কান্নাকাটি শুরু করেছে।আমি বুঝলাম না কান্নার কি হল??এটা যে ঘটবে তা তো অনেক আগে থেকেই অনুমিত ছিল।খালি খালি কান্না কাটি করে তো কোনো লাভ নেই। আমার কোন সময়ই ঝঞ্ঝাট ভাল লাগে না।তাই আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।আমি অনেক দিন আমার উনাকে দেখি না,  আজকে দেখি তাহার কি অবস্থা।


রাস্তায় বেরোলাম আমি ।আজকে সবকিছুই কেন জানি ভাল লাগতে লাগল।প্রতিদিন রাস্তার যে কুকুরটা কে দেখে নাক সিটকাতাম ,আজ সেই কুকুরটাকে দেখেই কেন জানি মায়া লাগতে লাগল। ঢাকার নোংরা রাস্তাঘাট গুলোও কেন জানি ভাল লাগতে লাগল ।ধীরে ধীরে ওর ভার্সিটি তে পৌঁছে গেলাম।যদিও এটা আমার নিজের ভার্সিটি না,তবুও এটা আমার অনেক চেনা।ওর সাথে অনেক বার এসেছি এখানে।এমন কি ওর সাথে বসে ওর ক্লাসও করেছি।ভার্সিটিতে পৌঁছেই ওর দেখা পেলাম।মাঠে বসে গল্প করছে ওর বন্ধুদের সাথে।নাহ একটুও বদলায়নি এই কয় দিনে।আগের মতই আছে একদম।ওর সাথে প্রথম পরিচয় এর কথা এখনও মনে পড়ে।ডিবেট করতে যেয়ে যেই ক্যাবলা ছেলের সাথে পরিচয় হয়ে ছিল ওর প্রেম এ কিভাবে পড়েছিলাম নিজেও জানিনা।শুধু মনে আছে ঐ শীতের সকালে ও যখন এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে আমাকে প্রোপোজ করেছিল তখন না বলতে পারি নি। এরপর আমি নিজেই ইচ্ছা করে ওর মন ভেঙ্গেছি।কি করব?? উপায় ছিল নাতো। হঠাৎ করেই শরীরে যে রোগ এর অস্তিত্ব পাওয়া গেল। আমার দুঃখ এর সাথে কিছুতেই ওকে জড়াতেই চাইনি আমি।এরপর শুনেছিলাম নাকি অনেক বদলে গিয়েছিল ও।আজকে ওকে সুস্থ স্বাভাবিক দেখে তাই অনেক ভাল লাগছে আমার । আমাকে ছাড়া যে ও আবার স্বাভাবিক জীবন এ ফিরতে পেরেছে,এটাই আমার কাছে অনেক।


এখনও ওকে দেখছি আমি,বুঝলাম এখনো খবরটা পাইনি সে। খবর টা পেয়ে ও কি করে দেখতে খুব ইচ্ছা আমার।তাই এখানে ছুটে আসা।ওই তো নিতিকে দেখছি ছুটে আসছে। ওকেই খুঁজছে নিতি।দুজনের কথোপকথন কাছ থেকে শোনার জন্য কাছে গেলাম আমি-


“রুদ্র, রোদেলা আর নেই” নিতির চোখে পানি।


“নেই মানে?? কি বল তুমি এসব??” রাজ্যের বিস্ময় রুদ্রর চোখে।


“আজ সকালেই ও মারা গেছে রুদ্র” ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল নিতি।


“কি ভাবে??”


“ও তোমাকে মিথ্যা কথা বলেছিল, ওর কারও সাথে আংটি বদল হয়নি,ওর খুব একটা কঠিন অসুখ ধরা পরে,ও নিজেকে তোমার কাছ থেকে সরিয়ে নিতে ওই কথা বলেছিল ও... ”

চোখের সামনে মানুষটাকে ভেঙ্গে পড়তে দেখলাম। খুব ইচ্ছা হচ্ছিল ওর মাথায় হাত রেখে বলি কেঁদোনা তুমি, আমার জন্যে তুমি অনেক কেঁদেছ, আর না। কিন্তু কিছুই করলাম না।কারণ আমার স্পর্শ, আমার কথা কোনও কিছুই আর তার নাগালের মধ্যে নাই। আমি শুধু বললাম ক্ষমা করে দিয়ো তুমি।তোমায় নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল।কিন্তু কিছুই পূরণ করতে পারলাম না। উলটো তোমাকে কষ্ট দিয়ে অনেক দূরে চলে গেলাম।কিছুই শুনতে পাচ্ছনা তুমি জানি, তবুও বললাম ভাল থেক।সুখে থেক।




--AYO ZOE

FB ID:AYO ZOE

No comments:

Post a Comment