Subscribe:

মেঘগুলো বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাক

“ইনান ! তুই আমাকে খোঁচাচ্ছিস কেন ?” অমিত আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল ।
আমি ওর চেয়েও আরেক ধাপ নিচু গলায় ফিসফিস করলাম, “ওহে গর্দভ ! আমি খোঁচাচ্ছি না । তোর গায়ে গাছের ডালের খোঁচা লেগেছে ।”
“ ও ! হে হে !”

“হাসি বন্ধ কর ! পাহারাদার শুনে ফেললে তোর হাসি বের করে দেবে !”

সাথে সাথে অমিত হাসি থামিয়ে দিল । ভাল ছেলে । আমার সব কথা শোনে !

“কিন্তু ইনান, আমরা যে এই বাগানের আম চুরি করবো, তাহলে বাগানের মালিককে ক্ষতিপূরণ দেবে কে !”

গাধাটা একটা ভাল কথা বলেছে ! এটা অবশ্য বেশ চিন্তার বিষয় ! আমি অন্ধকারেই আমার মাথাটা একটু চুলকে নিলাম ।

“একটা কাজ করা যায় !”, অমিত বলল । “চাচা মিয়ার মোবাইলে আমরা চুরি করা আমের যে দাম হবে, তার সমপরিমাণ টাকা ফ্লেক্সি করে দিতে পারি !”
আমি মাথা নাড়লাম । “চাচা মিয়ার কোন মোবাইল নেই ।”
অমিত হাল ছাড়লনা । “তাহলে একটা কাজ করা যায় । তুই বললি না যে উনি একটু চোখে কম দেখে ? আমরা দৌড় দিয়ে যেয়ে ওনার লুঙ্গির ভেতর টাকা গুঁজে দিয়ে আসব ! উনি বুঝতেই পারবেনা !”
আমি এবার বড়ই হতাশ বোধ করলাম । অমিতটার মাথায় আর বুদ্ধি হলনা । বললাম, “আরে ছাগল ! আমরা ওনার লুঙ্গির ভেতর টাকা গুঁজে দিতে গেলে যদি ওনার লুঙ্গি খুলে যায় ! এই বুড়ো বয়সে কি তুই ওনার মান সম্মান নিয়ে টানাটানি করবি !”
“তাইতো !” অমিত এই পরিকল্পনাও বাতিল করে দিল ।

আমরা আম চুরি ফেলে রেখে খুব মনোযোগ দিয়ে ভাবতে লাগলাম, কিভাবে আম চুরির ক্ষতি পোষানো যায় !

এদিকে আমাদের পরিকল্পনা তৈরি করতে করতে কখন যে আমবাগানের পাহারাদার আমাদের এইদিকে চলে এসেছে, তা আমরা খেয়ালই করিনাই ! হঠাৎ অমিত আমাকে ঠেলা দিয়ে বলে উঠলো, “এই দ্যাখ দ্যাখ ! বাগানের মধ্যে দিয়ে মোটরসাইকেল আসছে !”
আমি সেদিকে তাকিয়েই প্রমাদ গুনলাম । “ওরে ছাগলা ওটা মোটরসাইকেল না ! পাহারাদারের টর্চ লাইট ! শিগগির পালা ! ধরতে পারলে খবর আছে !”

সুতরাং দে ছুট । আমরা এক ছুটে বাড়ি ! আম চুরির মিশন অতি করুণভাবে ধূলিসাৎ হয়ে গেল !

বাড়ি মানে দাদার বাড়ি । আমি আর অমিত কয়েকদিনের জন্য গ্রামে বেড়াতে এসেছি । অমিত কখনো গ্রামে আসেনি । তাই আমাকে অনেক দিন ধরেই বলছিল যে তোর দাদার বাড়ি তো গ্রামে । আমাকে একটু সময় করে নিয়ে যাবি । গ্রাম দেখার আমার খুব শখ ।

এসেছি দুইদিন হল । আর এই দুইদিনে আমরা দুই বন্ধু আমাদের বাঁদরামির চূড়ান্ত নিদর্শন দেখে নিজেরাই বারবার অবাক হয়ে যাচ্ছি ! তবে সমস্যা নেই । যেরকম মজা আমরা এখন করছি, সেটা জীবনেও করিনি ! অবশ্য জিতুকে খুব মিস করছি । বেচারার জ্বর আসার আর সময় পেলনা ! ও আসলে আরও বেশি মজা হত ।

রাতে খাওয়া শেষ করে অমিত ঘুমিয়ে পড়ল । ওর নাকি খুব ঘুম পাচ্ছে । আমার এত তাড়াতাড়ি ঘুম আসবেনা । তাই বাইরের বারান্দায় এসে বসলাম । আমার দাদার বাড়িটা অনেক বড় । পুরনো আমলের দোতালা বাড়ি । বাড়ির দোতালার বারান্দায় বসলে গাছপালার উপর দিয়ে বেশ খানিকটা দূরে শান্ত নদীটা দেখা যায় । খুব সুন্দর নদীটা । সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগে শেষ বিকেলে সূর্য ডোবার সময় । লালচে আলোতে । আর রাতের বেলা । আর আকাশে চাঁদ থাকলে তো কথাই নেই !

কালচে নীল আকাশটা তে চাঁদটা চুপ করে ঝুলে থাকে । আর তার অসম্ভব রকম মায়াবী আলো ছড়িয়ে থাকে চারদিকে ! যখন শীতকাল থাকে, তখন চারপাশটা কুয়াশাতে ঢেকে থাকে । মাঝে মাঝে অল্প অল্প বাতাস গায়ে একটু কাপন ধরিয়ে দিয়ে যায় । কুয়াশার স্তর একটু হালকা হয় । চাঁদের আলোয় অস্পষ্ট ভাবে দেখা যায় ফসলের ক্ষেতগুলো । তার ওপাশে নদী । কুয়াশা মোড়া নদী । অদ্ভুত সুন্দর ! যে সৌন্দর্যের কোন সংজ্ঞা নেই !

এদিকে রাতের নীরবতা ভাঙতে ওস্তাদ শেয়ালগুলো তো আছেই ! তাদের হুক্কা হুয়া চলে থেমে থেমে । আমি চুপ করে চাদর মুড়ি দিয়ে বসে থাকি । আর চারপাশে তাকিয়ে স্নিগ্ধতার সংজ্ঞা খুঁজি । মায়াময়তার সংজ্ঞা খুঁজি । খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি যে, এই অপরুপ সৌন্দর্য, অদ্ভুত নিস্তব্ধতাকে অনুভব করে নিতে হয় । এর মাঝেই খুঁজে নিতে হয় নিজের ক্ষুদ্র অস্তিত্বকে ! আমি তাকিয়ে থাকি আর নিজেকে বারবার খুঁজে পেতে চেষ্টা করি ।

এখন গরমকাল । তাই কুয়াশা নেই । সেজন্য নদীটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । আমি বসে আছি । সামনে তাকিয়ে দেখছি আর সবকিছুকে অনুভব করার চেষ্টা করছি । কিন্তু চুপচাপ আর কতক্ষণ বসে থাকা যায় ! তাই নিজেই নিজের মনের সাথে কথা বলা শুরু করলাম । মানে মন আমার সাথে কথা বলা শুরু করল । যখন আমার কিছু করার থাকেনা তখন আমি এই কাজটা করি ।
“ভাই আছেন কেমন ?”
“এইতো ভাই । দিনকাল কেটে যাচ্ছে একরকম ।”
 “খুব ভাল কথা । আচ্ছা ভাই ! একটা প্রশ্ন করি ?”
“জি করুন ।”
“আপনি কি জীবনে প্রেম করবেন না ?”
“ওরে পাগল মন ! প্রেম করিস না রে প্রেম করিস না !”
“আরে আমি আপনাকে এই কথা জিজ্ঞেস করলেই আপনি এই একই উত্তর বারবার দেন কেন ? ভাই আপনি কি প্রেমে বিফল দেবদাস জাতীয় কিছু নাকি ?”
“ধুর ! কি যে বলেন ! প্রেমই তো করলাম না জীবনে, দেবদাস হব কিভাবে ?”
“তাইতো তাইতো । আচ্ছা ওই যে অনিমা ! ওই মেয়েটা আপনাকে এত পছন্দ করে, এত ভালোবাসে ! তবুও আপনি তাকে গ্রহণ করেননা কেন !”
“হা হা । আরে ভাই ! তেল আর জল কি কখনো একসাথে মেশে !”
“কি যে বলেন ! মেয়েটা এত্ত সুন্দর ! ইউনিভার্সিটির সব ছেলে ওর জন্য পাগল । আর সেই মেয়ে পাগল আপনার জন্য । কিন্তু আপনি তাকে পাত্তাই দেননা ! এটা কি ঠিক !”
“ভাই রে ! সুন্দর হলেই কি সব হয়ে যায় নাকি ! ও হল বড়লোক বাবার মডার্ন মেয়ে । আমার সাথে ওর অনেক পার্থক্য ।”
“কেন ? আপনার বাবা কি বড়লোক না ? আপনি কি আধুনিক ছেলে না ?”
“আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারেননি । আমি টাকা পয়সা বা স্মার্টনেসের কথা বলছিনা । আমাদের মূল্যবোধ এক না । আমাদের চিন্তাধারা একরকম না । আমাদের মনমানসিকতার মধ্যে বিস্তর ফারাক । আমাদের মধ্যে কখনই এইধরনের সম্পর্ক সম্ভব নয় ।”
“উফফ ! আপনার এত গম্ভীর কথাবার্তা আমি বুঝিনা ভাই । তবে আমার একটা কথা মনে হচ্ছে বারবার । আমার ধারনা আগামী কালকে এই গ্রামে অনিমার আগমন ঘটবে ।”
“কি বলেন ! অনিমা এখানে আসবে কেন !”
“আপনি ভুলে যাচ্ছেন । কাল অনিমার জন্মদিন । আর ও আপনার প্রতি যেরকম সিরিয়াস ! আমি নিশ্চিত যে কাল ও আপনাকে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে খুঁজবে এবং খুঁজে পাবেনা । আর তারপর ও যদি জানতে পারে আপনি কোথায় আছেন, তাহলে নির্ঘাত সাথে সাথে এখানে রওনা দিয়ে দেবে !”

কথাটা মোটামুটি সত্যি ! আমার জন্য অনিমার পাগলামি নতুন কিছু নয় । বিশেষ করে তার প্রত্যেক জন্মদিনে আমাকে একবার না দেখলেই নয় ! ও যদি সত্যিই কাল এখানে চলে আসে, তাহলে অবাক হবার কিছুই নেই !

আমি যথেষ্ট পরিমান চিন্তিত হয়ে ঘুমাতে গেলাম ।

অবশ্য চিন্তার বৃক্ষ বেশিদূর ডালপালা মেলতে পারলনা । মানে মেলে দেয়ার সুযোগ পেলনা আর কি ! পরদিন বিকেলের মুখেই যখন অনিমাদের প্রাডোটা সদম্ভে গ্রামের রাস্তা দিয়ে এগিয়ে আসলো কিছুটা ইতস্তত ভাব নিয়ে, আমি মানে মানে বুঝে নিলাম আজ আমার সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে !

পুকুরের ধারে আমি আর অমিত বসে ছিলাম । মাছ ধরার জন্য বড়শির ছিপটা মাত্র ফেলেছি, এইসময় অমিতের খোঁচা খেয়ে ফিরে তাকালাম । কালো রঙের জীপ টা দেখেই আমি স্যান্ডেল না পরেই দিলাম ঝেড়ে দৌড় ! খালি পায়ে ! কিন্তু বিধিবাম ! দৌড়ালে কি হবে ! এই পোড়া কপালে সুখ বেশি সয় না ! আমি দৌড় দেয়ার আগেই অনিমা আমাকে দেখে ফেলেছে । খানিক পর খেয়াল হল আমি অদ্ভুত এক দৃশ্যের জন্ম দিয়েছি !

গ্রামের রাস্তা দিয়ে পড়িমরি করে ছুটছে একটা যুবক ! তার পা দুটো খালি আর চোখে মুখে আতঙ্ক ! পেছনে ছুটছে অসম্ভব সুন্দর এক তরুণী ! তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে ধরতে পারলে খেয়ে ফেলবে !

এবারে যথারীতি পোড়া কপালের জোরে সিনেমাটিকভাবে আমি আছাড় খেলাম । এবং ডাকাত গোছের মেয়েটা দুই লাফে আমাকে ধরে ফেলল !

“আমি কি বাঘ ভালুক না গরিলা ! তুমি আমাকে দেখে এভাবে হাঁদারামের মত পালালে কেন ?” হাপাতে হাপাতে বলল অনিমা ।
আমি চুপ করে থাকলাম ।
“এই ! কথা বল !”
আমি কি বলবো ঠিক বুঝে উঠতে পারলামনা । হতভম্ব ভাবটা কাটিয়ে উঠে হঠাৎ করেই কেন যেন আমার খুব রাগ হতে লাগলো ।
“ইনান, আজকে আমার জন্মদিন ! আমি তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি আর তুমি আমাকে দেখে পালাচ্ছ !”
এবার আমি কথা বললাম । কেন যেন আমার প্রচণ্ড রাগ হয়ে গেল । “আমি তোমার সাথে যাব কেন ! তোমার জন্মদিন তো আমার কি ! আমি তোমাকে কতদিন বলেছি যে তোমার সাথে আমার সম্পর্ক সম্ভব না ? তারপরও তুমি আমার পিছু ছাড়না কেন !”
অনিমাও এবার রেগে গেল । “এই ছেলে । তোমার এত অহংকার কিসের ! এত দম্ভ কিসের ! আমার মধ্যে কি নেই যে তুমি আমাকে গ্রহণ করবেনা ! বল ?”

আমি এবার অনিমার হাত ধরে টান দিলাম । ওকে টেনে নিয়ে চললাম নদীর দিকে । বুঝলাম ও ব্যথা পাচ্ছে কিন্তু ও টু শব্দটুকুও করলনা ।

“এদিকে এসো ! এখানে দাঁড়াও । এবার ওইদিকে তাকাও তো । কি দেখতে পাচ্ছ ?”
অনিমা সেদিকে তাকাল । “নদী দেখতে পাচ্ছি । আর নদীর ধারে একটা সৌধ ।”
আমি কথা বলে উঠলাম । হঠাৎ করেই আমার কণ্ঠস্বর কেমন যেন দৃপ্ত হয়ে উঠেছে !
“হ্যাঁ সৌধ ! ভাল করে দেখো । তুমি জানতে চাইলে না আমার কিসের এত অহংকার ? ওই সৌধটা আমার অহংকার ! বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এরকম হাজারো সৌধ আমার অহংকার ! ওটা আমার দাদার স্মৃতিসৌধ ! আমার দাদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন । এই দেশকে স্বাধীন করতে প্রান দিয়েছেন ! ভাবতে পার একটা দেশের জন্য প্রান দেয়া কতটা বড় ব্যাপার ! ওনার মত লাখ লাখ মানুষ প্রান দিয়েছেন বলেই আজকে আমি তুমি এইখানে, এই স্বাধীন দেশে দাড়িয়ে আছি । মন খুলে কথা বলতে পারছি !”
আমি বলতে থাকি, “তুমি জানো ? আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা ! সেই অতটুকু বয়সে ছোট্ট বুকে অসীম সাহস নিয়ে উনি ঝাপিয়ে পড়েছিলেন দেশকে বাঁচানোর জন্য ! দেশের প্রতি কতোখানি ভালবাসা থাকলে এটা সম্ভব একবার ভেবে দেখো ! কিন্তু ওই অতটুকু ছেলেটাও রক্ষা পায়নি অসভ্য রাজাকারগুলোর হাত থেকে ! ওরা আমার বাবার একটা হাত কেটে নেয় ! কিসের অপরাধে ? দেশকে রক্ষা করতে ঝাপিয়ে পড়ার অপরাধে ! সেই থেকে আমার বাবা এক হাত নিয়ে বড় হয়েছেন !”
“অনিমা, এবার তুমি বুঝতে পারছ আমাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায় ? তুমি কি একবারও আমাদের দেশটাকে নিয়ে ভেবেছ ? নাকি ডুবে থেকেছ অর্থ বিত্ত, প্রাচুর্য আর পশ্চিমা সংস্কৃতি নিয়ে ! আমি তোমাকে দেখেছি, রাস্তার এতিম একটা শিশুর গায়ে হাত তুলতে, শুধুমাত্র একটু খাবার চাওয়ার অপরাধে ! সেদিনই আমার হিসেব মেলানো হয়ে গেছে !”

“দেখো অনিমা, আমার দাদার মত অসংখ্য মানুষ প্রান দিয়েছেন, আমার বাবা ছোট্ট বয়স থেকে হাত হারানোর যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন কি স্বাধীন দেশে অনাথ শিশুরা এইভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে বলে !  মানুষের হাতে মার খাবে বলে ! আর সেখানে রাজাকারদের গাড়িতে উড়বে স্বাধীন দেশের পতাকা ! তরুন প্রজন্ম দেশের কথা ভুলে মেতে থাকবে বিদেশের সংস্কৃতি নিয়ে ! এটা কি সত্যিই অদ্ভুত না ? এর জবাব কি আমরা দিতে পারব ?”

সেদিন আমার কণ্ঠস্বরের দৃপ্ততা, বলিষ্ঠতা আমাকেই ছাড়িয়ে গিয়েছিল প্রতি মুহূর্তে ।

অনিমা কোন কথা বলেনি ।

দিনের নিয়মে দিন কেটে যাচ্ছে । আমরা কয়েকজন বন্ধু একটা সংগঠন খুলেছি । আমাদের উদ্দেশ্য তরুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে যতটুকু পারা যায় জানানো । কয়েকদিন পর একটা অনুষ্ঠান আছে আমাদের সংগঠনের । এখানে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অভিজ্ঞতা শোনাবেন ।

অনিমার মধ্যে আজকাল কেমন যেন একটা পরিবর্তন খেয়াল করি । মেয়েটা জিনস টিশার্ট ছেড়ে এখন বাঙালি পোশাক পড়ে । কি যে সুন্দর লাগে ওকে এই পোশাকগুলোতে ! আবার নিয়ম করে ও পথশিশুদের খাবার আর জামাকাপড় দেয় । আর আমাকে দেখলেই একটা লাজুক হাসি দেয় ! হাসিটাও না একেবারে শতভাগ বাঙ্গালী হাসি !

আর আমি ? আমার যে কি হয়েছে ! আজকাল সবকিছুতেই কেমন যেন একটা মিষ্টি সুবাস পাই ! অঝোর বৃষ্টি কিংবা জানালার ফাক গলে আসা শেষ বিকেলের রোদের মাঝেও আমি কেন যেন ভালোবাসা খুঁজতে থাকি !

আমার মন আমাকে খোঁচা দেয়, “ আরে ভাইজান ! এসব কি দেখছি গো !”
আমি চুপ থেকে একটু হাসি দিই ।
মন আমাকে চোখ টেপে ! “চালিয়ে যান ভাই ! আমি আছি আপনার সাথে !”

আমাদের আকাশের মেঘ সবে কাটতে শুরু করেছে । ওই তো ! আমি ঝলমলে সূর্যটা দেখতে পাচ্ছি । ওটা আর বেশি দূরে নেই ।

Minhazul Abedin

FB ID : Miinhaz Rabbii 

No comments:

Post a Comment